শর্ট টেকনিক ও বিভিন্ন কৌশল
উপসর্গঃ- অর্থহীন অথচ অর্থ-দ্যোতক যে
সকল অব্যয়সূচক শব্দাংশ কৃদন্ত বা নাম শব্দের পূর্বে বসে শব্দগুলোর অর্থের সংকোচন,
প্রসারণ কিংবা অন্য কোন পরিবর্তন সাধন করে নতুন শব্দ গঠন করে, তাকে উপসর্গ বলে। যেমন:
দেশ একটি শব্দ। এর পূর্বে উপসর্গ যোগ করলে হয় আদেশ,
বিদেশ, প্রদেশ, উপদেশ, নির্দেশ ইত্যাদি।
উপসর্গ মনে
রাখার সহজ কিছু উপায়ঃ
উপসর্গ তিন প্রকার। যথা: ১.
সংস্কৃত উপসর্গ। এর সংখ্যা ২০টি। ২. বাংলা উপসর্গ। এর সংখ্যা ২১ টি। সংস্কৃত ও বাংলা উপসর্গের
মিল আছে ৪ টি। তা
হলো বি, নি, সু, আ। ৩. বিদেশি উপসর্গ
খাঁটি বাংলা
উপসর্গ মনে রাখার সহজ উপায়ঃ (১ম পদ্ধতি)
২১ টি খাটি বাংলা উপসর্গ: পাতি,
অজ, অঘা, রাম, সা, হা, অনা, স, কু, উন, আ, কদ, আড়, আন, আব, ভর, ইতি, আ, সু, নি, বি
মনে রাখার কৌশল:
প্রিয় সুহাস, (সু ,হা, স) আদর (আ)
নিবি (নি, বি) । তুই আমাদের অজপাড়া (অজ) গাঁয়ের আশা ভরসা (ভর,
সা) । রাম ছাগলদের অনাচার (অনা), কুকথা
(কু), আড়চোখে (আড়)
তাকানোকে পাত্তা দিবিনা। তোর জন্য আবডালের (আব)
ঊনপঞ্চশটি (ঊন) পাতিলেবু (পাতি) ও কদবেল (কদ্) পাঠালাম
। অচেনা (অ) জায়গায় মন আনচান (আন) করলে খাবি ।
ইতি (ইতি)
অঘারাম (অঘা রাম) ।
📢 বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য সুযোগ!
আপনার কোচিং সেন্টার, শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান, পণ্য বা সেবাকে হাজারো পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে চান?
আমাদের ডিজিটাল ইবুক ও ওয়েবসাইটে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা প্রবেশ করেন। তাই আপনি যদি আপনার ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি, রিচ বাড়ানো বা সুনির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েন্সে পৌঁছাতে চান, তাহলে আমাদের প্ল্যাটফর্ম হতে পারে আপনার সেরা বিজ্ঞাপন মাধ্যম।
🎯 বিজ্ঞাপন দিতে পারেন নিচের ধরণে:
📘 কোচিং সেন্টার/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোর্স ও অফার
🛍️ শিক্ষাসংক্রান্ত পণ্য (বই, শিক্ষা উপকরণ, অ্যাপ ইত্যাদি)
🎓 অনলাইন কোর্স, ওয়েবসাইট বা YouTube চ্যানেল
🖥️ সফটওয়্যার/অ্যাপ/ডিজিটাল সার্ভিস
🏢 আপনার ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের প্রমোশন
💼 আমাদের অফার:
✅ ইবুকের কভার বা শেষ পৃষ্ঠায় বিজ্ঞাপন ব্যানার
✅ ওয়েবসাইটের হোমপেজ ও নির্দিষ্ট পোস্টে বিজ্ঞাপন স্লট
✅ ব্লগ আর্টিকেলে বিজ্ঞাপনযুক্ত লিঙ্ক ও ছবি
✅ বিশেষ সাজেশন বা কোর্স রিভিউ হিসেবে উল্লেখ
📩 যোগাযোগ করুন:
আপনার বিজ্ঞাপন/প্রোমোশনাল কনটেন্ট দিতে বা অফার জানতে ইমেইল করুন –
📧 zerotoinfinity247bd@gmail.com
🌐 অথবা সরাসরি ভিজিট করুন: https://zerotoinfinity24bd.blogspot.com
স্মার্ট বিজ্ঞাপন দিন, স্মার্ট পাঠকের কাছে পৌঁছান!
আমরা আপনার ব্র্যান্ডকে পৌঁছে দেব হাজারো গন্তব্যে।
খাঁটি বাংলা
উপসর্গ মনে রাখার অন্য কৌশলঃ (২য় পদ্ধতি)
খাঁটি বাংলা উপসর্গ (২১টি)
। মনে রেখো, বাঙালিরা বেশি খায় তাই ২১ টি। কেননা তৎসম
উপসর্গ ২০টি। বাংলা উপসর্গ সবসময় খাঁটি বাংলা শব্দ বা তদ্ভব শব্দের পূর্বে ব্যবহৃত হয়।
“আড়”চোখে “রাম”,
“অজ”মূর্খ “অঘা”রাম।
“হা”ভাতে “পাতি”হাঁস,
“নি”খুত “ইতি”হাস।
“কদা”কারে “ঊ”নিশ,
“স”ঠিকে “বি”শ।
“অনা”চারে “কু”নজর,
“অ”পয়াকে “সু”নজর।
“আব”ছায়ায় “আন”চান,
“ভর”পেটে “সা”বধান।
“আ”গাছাকে “বি”নাশ,
“কু”শাসনে “স”র্বনাশ।
বাংলা
উপসর্গঃ
পাতি, অজ, অঘা, রাম, সা,
হা, অনা, স, কু, উন, আ, কদ, আড়, আন, আব, ভর, ইতি, আ, সু, নি, বি = ২১ টি । “আ, সু, নি, বি” খাটি
বাংলা এবং তৎসম দুই ধরণের উপসর্গেই আছে। তাই এরা কমন। বাকী যা থাকে সেগুলো সবই (বিদেশী ছাড়া) তৎসম উপসর্গ (২০টি) । কাজেই এই
সংক্ষিপ্ত গল্পটা মনে রাখতে পারলেই উপসর্গ মনে রাখা সহজ হবে।
তৎসম বা সংস্কৃত
উপসর্গ মনে রাখার সহজ সূত্রঃ
(অপি, অপ, প্রতি, অভি, বি,
প্র, অতি, উৎ, সু, আ, নি, নির, অব, অধি, সম, দূর, পরা, উপ, অনু, পরি) = ২০ টি।
মনে রাখার
কৌশল: অপি (অপি) আপুর (অপ) প্রতি
(প্রতি) অভি (অভি)
ও বিপ্রদাস (বি প্র) অতি (অতি) উৎসুক (উৎ, সু) ।
তাই আমি (আ) নিরঅবধি (নি,
নির, অব, অধি) সমদুরত্ব (সম, দু) রেখে
তার দেয় পড়া (পরা), উপ (উপ) অনুচ্ছেদ (অনু) পড়িনি
(পরি) ।
আরবি উপসর্গ
মনে রাখার সহজ উপায়ঃ গর লা বাজে আম খাস?
ইংরেজি
উপসর্গ মনে রাখার সহজ উপায়ঃ
”হেড” সাহেব ”সাব” ”হাফ” ও ”ফুল” হাতা
শার্ট পরেন।
হিন্দি
উপসর্গ মনে রাখার সহজ উপায়ঃ “হর” “হরেক”
ফারসি উপসর্গ মনে
রাখার সহজ উপায়ঃ
“না” “ফি” ‘র
“বর” “বদ” মায়েশ।
“বে” আদব, “কম” ‘জোর,
ও “ব” কলম। কিন্তু “কার”
‘বার ও “দর” স দালানে তিনি “নিম”রাজি।
দ্রষ্টব্য
শুধুমাত্র “..” এর মধ্যে যা দেওয়া আছে, ওটাই উপসর্গ।
|
সমার্থক শব্দঃ-- সমার্থক বলতে সমান অর্থকে
বুঝায়। অর্থাৎ সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ হলো অনুরূপ
বা সম অর্থবোধক শব্দ। যে শব্দ অন্য কোন শব্দের একই অর্থ কিংবা প্রায় সমান
অর্থ প্রকাশ করে, তাকে সমার্থক শব্দ বলা হয়। সমার্থক
শব্দের একটিকে অন্যটির প্রতিশব্দ বলা হয়।
ছন্দে ছন্দে সমার্থক
শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
আমরা
জানি পৃথিবীর পেরেক বলা হয় পাহাড়কে। পাহাড় পৃথিবীর ভারসাম্যতা ধরে রাখে। মজার
ব্যাপার হচ্ছে পৃথিবীর সমার্থক শব্দের সাথে ‘ধর’ যোগ
করে দিলেই তা পাহাড়ের সমার্থক শব্দ হয়ে যাবে।
যেমন:
পৃথিবী – ভূ,
অবনী, ধরণী, ধরা, মহী, মেদিনী, ক্ষিতি, পৃথ্বী । পাহাড় – ভূধর, অবনীধর, ধরণীধর, ধরাধর, মহীধর, মেদিনীধর, ক্ষিতিধর, পৃথ্বীধর ।
এরকম
সূর্যের আলোয় পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যায়, ঘনীভূত হয় মেঘে। অর্থাৎ মেঘ পানি ধরে রাখে
এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে পানির সমার্থক শব্দের
সাথে ‘ধর’ যোগ করে দিলেই তা মেঘের সমার্থক
শব্দ হয়ে যাবে। যেমন: পানি – জল, নীর,
অম্বু, বারি, পয়, তোয় । মেঘ – জলধর, নীরধর, অম্বুধর, বারিধর, পয়ধর, তোয়ধর
আবার
‘নিধি’ শব্দের অনেকগুলো অর্থের মধ্যে একটি
হচ্ছে আধার বা স্থান। তাহলে ‘পানি’র সমার্থক শব্দের সাথে ‘নিধি’ যোগ করে দিলেই তা পানির মূল আধার বা স্থান
সমুদ্রকে বুঝাবে। যেমন: পানি – জল, নীর,
অম্বু, বারি, পয়, তোয় । সমুদ্র – জলনিধি, নীরনিধি, অম্বুনিধি, বারিনিধি, পয়নিধি, তোয়নিধি ।
আকাশের
সমার্থক শব্দ: গগন, শুন্য, আসমান, অন্তরীক্ষ, নভঃ,
অনন্ত, নভোমণ্ডল, ব্যোম, দ্যু।
কিছু confusing সমার্থক
শব্দঃ
১. ‘খ’ শব্দের সমার্থক শব্দ হলো ‘আকাশ’; আর ‘খগ’ শব্দের
সমার্থক শব্দ হলো ‘পাখি’।
২. ‘পবন’ শব্দের অর্থ হলো ‘বাতাস’; আর ‘পাবন’ শব্দের
অর্থ হলো ‘আগুন’।
৩. ‘পরভৃৎ’ শব্দের অর্থ হলো ‘কাক’; আর ‘পরভূত’
শব্দের অর্থ হলো ‘কোকিল’।
৪. ‘কুমুদ’ শব্দের অর্থ হলো ‘পদ্ম’, ‘কুমুদিনী’ শব্দের
অর্থ হলো ‘পদ্মের দল’; আর ‘কুমুদনাথ’ শব্দের অর্থ হলো ‘চন্দ্র’।
৫. ‘নগ’ শব্দের অর্থ হলো ‘পর্বত’; আর ‘নাগ’
শব্দের অর্থ হলো ‘সাপ’।
৬. ‘পাদপ’ শব্দের অর্থ ‘যে পা দিয়ে পান করে’, ‘বৃক্ষ’;
আর ‘পাদ্য’ শব্দের অর্থ ‘পা ধোয়ার জল’।
৭.
‘দ্বীপ’ শব্দের অর্থ হলো ‘চারদিকে জল-বেষ্টিত ভূভাগ’; ‘দীপ’
শব্দের অর্থ হলো ‘প্রদীপ’/’বাতি’; আর ‘দ্বিপ’ শব্দের অর্থ হলো ‘হাতি’।
৮. ‘পুষ্কর’ শব্দের অর্থ হলো ‘পদ্ম’; আর ‘পুষ্করিণী’ শব্দের
অর্থ হলো ‘পুকুর’।
৯. ‘আপন’ শব্দের অর্থ হলো ‘নিজ’; আর ‘আপণ’ শব্দের
অর্থ হলো ‘দোকান’।
১০. ‘মহী’,
‘ক্ষিতি’ শব্দগুলোর
অর্থ হলো ‘পৃথিবী’; আর ‘মহীরুহ’,
‘ক্ষিতিরুহ’ শব্দগুলোর অর্থ হলো ‘বৃক্ষ’।
১১. ‘জীমূত’ শব্দটি দিয়ে ‘মেঘ’ ও ‘পাহাড়’ দুটোই
বুঝায়।
১২. ‘সরোবর’ শব্দটি দিয়ে ‘দীঘি’ ও ‘পদ্ম’ দুটোই
বুঝায়; আর ‘সরোদ’ শব্দের অর্থ ‘এক প্রকার তারের বাদ্যযন্ত্র’।
১৩. ‘অটবি’ শব্দটি দিয়ে ‘বন’ ও ‘বৃক্ষ’ দুটোই
বুঝায়।
১৪. ‘কুঞ্জ’ শব্দের অর্থ হলো ‘বন’; ‘নিকুঞ্জ’ শব্দের
অর্থ হলো ‘বাগান’; আর ‘কুঞ্জর’
শব্দের অর্থ হলো ‘হাতি’।
১৫. ‘মৃগ’ শব্দের অর্থ হলো ‘হরিণ’; আর ‘শাখামৃগ’ শব্দের
অর্থ হলো ‘বানর’।
১৬. ‘পানি’ শব্দের অর্থ ‘জল’; আর ‘পাণি’ শব্দের
অর্থ ‘হাত’।
১৭. ‘শিখণ্ডী’ শব্দের অর্থ হলো ‘ময়ূর’; আর
‘শিখরী’ শব্দের অর্থ হলো ‘বৃক্ষ’, ‘পাহাড়’। ‘শিখী’ শব্দের
অর্থ হলো ‘ময়ূর’; আর ‘শাখী’
শব্দের অর্থ হলো ‘বৃক্ষ’।
১৮. ‘কান্তা’ শব্দের অর্থ হলো ‘নারী’; আর ‘কান্তার’ শব্দের
অর্থ হলো ‘বন’।
১৯.
‘আষাঢ়’ হলো একটি মাসের
নাম; আর ‘আসার’ হলো ‘জলকণা’/’নিদর্শন’/’চিহ্ন’।
২০. ‘ভূ’,
‘মেদিনী’, ‘মহী’, ‘ক্ষিতি’ শব্দগুলোর অর্থ হলো ‘পৃথিবী’; আর শব্দগুলোর সাথে যখন ‘ধর’ যুক্ত
হয় (যেমন- ভূধর, মেদিনীধর, মহীধর, ক্ষিতিধর)
তখন শব্দগুলোর অর্থ হয় ‘পাহাড়’; আর যখন শব্দগুলোর
সাথে ‘পাল’/’নাথ’/’পতি’ যুক্ত হয় (যেমন-
ভূপাল, ভূপতি, মহীপাল, মহীনাথ, ক্ষিতিপাল, ক্ষিতিনাথ, ক্ষিতিপতি) তখন
শব্দগুলোর অর্থ হয় ‘রাজা’।
২১. ‘প্রভা’,
‘কিরণ’, ‘অংশু’, ‘বিভা’, ‘ময়ূখ’ শব্দগুলোর অর্থ হলো ‘রশ্মি’/’আলো’;
আর
শব্দগুলোর সাথে যখন ‘কর’/’মালী’ যুক্ত হয় (যেমন-
প্রভাকর, কিরণমালী, অংশুমালী, বিভাকর, ময়ূখমালী) তখন শব্দগুলোর অর্থ হয় ‘সূর্য’।
২২. আমরা অনেক সময় ‘সমুদ্র’ এবং ‘মেঘ’-এর
প্রতিশব্দগুলো গুলিয়ে ফেলি কারণ এদের প্রতিশব্দগুলো প্রায় কাছাকাছি ধরণের। তাই
আমরা সহজে এভাবে মনে রাখতে পারি- যে শব্দগুলোর
শেষে ‘ধি’ থাকবে সেগুলো সমুদ্রের
প্রতিশব্দ এবং যে শব্দগুলোর শেষে ‘দ’ বা ‘ধর’
থাকবে সেগুলো মেঘের প্রতিশব্দ।
যেমন-
সমুদ্রের প্রতিশব্দ বারিধি,
জলধি, জলনিধি, অম্বুধি, সরোধি, উদধি, পয়োনিধি, তোয়ধি, বারিনিধি ইত্যাদি।
লক্ষ করুন সবগুলো শব্দের শেষে ‘ধি’ আছে।
আবার
মেঘের প্রতিশব্দ বারিদ,
জলদ, অম্বুদ, তোয়দ, জলধর, পয়োধর, তোয়ধর, নীরদ, পয়োদ ইত্যাদি। লক্ষ করুন
সবগুলো শব্দের শেষে ‘দ’ বা ‘ধর’ আছে।
ব্যতিক্রম: মোটামুটি একটি ব্যতিক্রমই রয়েছে সেটি হলো ‘জলধর’। এই শব্দটি দ্বারা ‘সমুদ্র’ এবং ‘মেঘ’ দুটোকেই
বুঝায়।
|
পারিভাষিক
শব্দঃ- বাংলা ভাষায়
ব্যবহৃত কতকগুলো বিদেশি শব্দের সরাসরি কোনো প্রতিশব্দ
না থাকায় ওই শব্দগুলোকে বোঝানোর জন্য যেসব বাংলা শব্দ ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে পারিভাষিক শব্দ বলে। এই শব্দগুলো
সরাসরি বা আংশিক পরিবর্তন হয়েছে আবার কিছু শব্দ
উচ্চারণের পরিবর্তন হয়ে বাংলাভাষায় সংযোজিত হয়েছে।
পারিভাষিক শব্দগুলো বাংলাভাষার শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ করেছে।
১.
পর্তুগীজ শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
গীর্জার পাদ্রি গুদামের বড় কামারার আলমারীর চাবি খুলে বালতি ভর্তি পাউরুটি,
আনারস আতা, আচার, কাবাব এবং কেরাণিকে দিয়ে ইস্পাতের অন্য বাসনে আলকাতরা, আলপিন, ফিতা
নিয়ে বেরিয়ে এসে সাবান মার্কা তোয়ালে পেতে বসলেন।
এখানেঃ গীর্জা, কামরা, পাদ্রি, গুদাম, আলমারী, চাবি, বালতি, পাউরুটি,
আনারস, আতা, আচার, কাবাব, কেরানী, ইস্পাত, বাসন, আলকাতরা, আলপিন, ফিতা, সাবান, মার্কা
এবং তোয়ালে পর্তুগীজ শব্দ।
আরো
একটি টেকনিক শিখে নিইঃ-
পাদরি, বালতি, আনারস, গীর্জা, গুদাম, আলমারি, চাবি, আলপিন, পাউরুটি।
গল্পঃ- পাদরি বালতি ভর্তি
আনারস নিয়ে গীর্জায়
গেল। গীর্জার গুদামে
ছিল এক আলমারি। চাবি
দিয়ে আলমারি খুলে ভেতর থেকে এক আলপিন পাওয়া গেল। ব্যাস, পাদরিটি
মনের সুখে আলপিন দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে পাউরুটি আর আনারস খেতে লাগল।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- শব্দের সিরিয়াল অনুযায়ী গল্প
বানানো হয়েছে। গল্প মনে রাখুন। শব্দগুলো খাতায় লিখে রাখুন। গল্প মনে থাকলে, শব্দ দেখেই
এরপর থেকে বুঝতে পারবেন এটা পর্তুগীজ।
অন্য
একটি গল্প দিয়ে পর্তুগীজ শব্দ মনে রাখিঃ-
গুরুত্বপূর্ণ পর্তুগীজ শব্দঃ- আতা, আচার, আয়া,
আলকাতরা, ইস্পাত, ইস্ত্রি, কামিজ, কাতান, কেদারা, গামলা, কাবাব, পিরিচ, কেরানি, কামরা,
ক্রুশ, জানালা, গরাদ, তোয়ালে, নিলাম, পাচার, পেয়ারা, পেরেক, পিস্তল, ফালতু, ফিরিঙ্গি,
ফিতা, বারান্দা, তামাক, বোতাম, বাসন, বোমা, বেহালা, বর্গা, মার্কা, মিস্ত্রি, মাস্তুল,
মস্করা, মাইরি, যীশু, সাবান, টুপি, সালসা, সাগু, কপি, পেঁপে।
এবার এই শব্দগুলো দিয়ে সিনেমা তৈরি করিঃ-
"আতা" এবং "আচার",
চুরি করে খেল "আয়া"। গেল মেজাজ গরম
হয়ে । ঢেলে দিলাম মুখে "আলকাতরা"। তাতেও
রাগ কমল না। দিলাম "ইস্পাতের" "ইস্ত্রি"
দিয়ে এক ছ্যাঁকা। এমা এমা এমা! পুড়ে গেল, পুড়ে গেল! এখন কি করা?
তার পোড়া "কামিজ" খুলে তাকে "কাতান" শাড়ি পড়ালাম। এরপর "কেদারায়" বসালাম।
"গামলা" ভর্তি "কাবাব" এনে "পিরিচ" এ পরিবেশন করলাম।
এই দৃশ্য খেয়াল করছিল এক "কেরানি", "কামরায়" বসে। তার গলায় ছিল "ক্রুশ"। সে "জানালা"র
"গরাদ" দিয়ে এসব দেখছিল। এবং "তোয়ালে" দিয়ে তার ঘাম মুছছিল। এখন তো আয়া আর কাজকর্ম
করতে পারবে না। কি উপায়?
"নিলাম" এ উঠাও, কেউ কিনল নাতো "পাচার" করে দাও। যদি পুলিশ ধরে ফেলে?
আয়াকে "পেয়ারা"র বাক্সে ভরে, "পেরেক" দিয়ে ঠুকে, পাচার করে দেয়া হল।
[এখন ছবির শ্যুটিং
হবে বিদেশে।]
বিদেশে নামার পরই "পিস্তল" ঠেকাল এক "ফালতু" "ফিরিঙ্গি"। যে "ফিতা" দিয়ে বেঁধে আয়াকে অপহরণ করে নিয়ে গেল। আয়াকে
ফেলে রাখল "বারান্দায়"। ফিরিঙ্গিটা হুকুম
করতে লাগল:-
এই আমার জন্য "তামাক" নিয়ে আয়, জামার "বোতাম" টা লাগিয়ে দে। "বাসন" গুলো মেজে দে।
আয়া এসব হুকুম সহ্য করতে পারল না। Boom! "বোমা"
মেরে উড়িয়ে দিল ব্যাটা ফিরিঙ্গিকে। এরপর
সে মনের সুখে "বেহালা" বাজাতে লাগল।
এইসব খেয়াল করছিল এক "বর্গা" চাষী "মার্কা" মারা "মিস্ত্রি"।
সে জাহাজের "মাস্তুল" ঠিক করছিল। এসব "মস্করা" দেখে সে বলেই উঠল, "মাইরি" বলছি, সবই "যীশু"র
ইচ্ছা।
মিস্ত্রিকে আয়ার মনে ধরল। মিস্ত্রির হাল দেখে আয়া
তাকে "সাবান" দিয়ে গোসল করিয়ে দিল । তার
"টুপি" তে করে "সালসা"
ও "সাগু" এনে তাকে খাওয়াল। এরপর!
দুজনে খুশি খুশি দিন যাপন করতে লাগল, "কপি" আর
"পেঁপে" চাষ করে।
মুভির হ্যাপি এন্ডিং! গল্প আর সিনেমাটা মনে রাখুন আর শব্দ গুলো নোট খাতায় লিখে রাখুন।
এরপর গল্প বা সিনেমাটা না দেখে নিজে নিজে শব্দগুলো দেখে গল্পটা মনে করার চেষ্টা করুন।
আশা করি, যে এই সিনেমা ও গল্পটা মনে রাখতে পারবে, পর্তুগিজ শব্দ তার কাছে কিচ্ছুনা।
২.
ফরাসি শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
বাংলা শব্দ ভান্ডারে
বহু ফরাসি শব্দ আছে যা এই উপমহাদেশে ফরাসিদের আগমন এবং তাদের ভাষা থেকে আমাদের বাংলা
ভাষায় স্থান করে নিয়েছে। নিচের চমৎকার ছড়াটির মাধ্যমে ফরাসি শব্দ মনে রাখা যায়।
ফরাসিরা কার্তুজ কাটে
কুপন নিয়ে
যায় রেস্তোরাঁয়
সেমিজ ঘরে পাতি পাতি
ডিপোতে সব বাস রয়।
কার্তুজ,
কুপন, ডিপো, রেস্তোরাঁ, আঁশ, ওলন্দাজ, শেমিজ, পাতি-এগুলো ফরাসি শব্দ।
৩.
ওলন্দাজ শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
বহু শব্দ ওলন্দাজ
ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে। নিচের ছড়াটির মাধ্যমে ওলন্দাজ শব্দ মনে রাখা
যেতে পারে।
ওলন্দাজদের তাস খেলতে
লাগে ইস্কাপন
আরো
লাগে টেক্কা তুরুপ
হরতন
ও রুইতন।
এখানেঃ ইস্কাপন, টেক্কা, তুরুপ, হরতন ও রুইতন।
৪.
তুর্কি শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
সুলতান দারোগার
বাবা আলখেল্লা পরে
বেগম জমিলা খাতুন
ও চাকরকে সাথে নিয়ে শিকারে গেলেন। তার বন্দুকের গুলিতে চাকুওয়ালা
বাবুর্চি এবং কুলির
লাশ পড়লে সাজা ভোগ শেষে মুচলেকা দিয়ে জনগনের বারুদ
নেভালেন।
এখানেঃ বাবা,
দারোগা, কুলি, লাশ, চাকু, বাবুর্চি, সুলতান, বন্দুক, বারুদ, চাকর, মুচলেকা, খাতুন,বেগম,
আলখেল্লা ইত্যাদি তুর্কি শব্দ।
৫.
গুজরাটি শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
গুজরাটিরা দামি
খদ্দর পরে হরতাল করে।
এখানে খদ্দর এবং হরতাল
গুজরাটি শব্দ।
৬.
পাঞ্জাবী শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
শিখ তারকাদের কাছে পাঞ্জাবীর
চাহিদা বেশি। এখানে তারকা, পাঞ্জাবী।
৭.
চীনা শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
চা,
চিনি, লিচু ও লুচি চীনাদের
প্রিয় খাবার। এখানে, চা, চিনি, লিচু ও লুচি চীনা
শব্দ।
৮. বার্ম শব্দ মনে
রাখার কৌশলঃ
বার্মাদের কাছে
লুঙ্গি ও ফুঙ্গি জনপ্রিয়
পোষাক। এখানে, লুঙ্গি, ফুঙ্গি বার্মা শব্দ।
৯.
জাপানি শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
হাসনাহেনা
ক্যারাটে ও জুডো শিখতে রোজ রিকসায় চড়ে
শহরে যায়। এখানে, হাসনাহেনা, ক্যারাটে, জুডো, রিকসায় হলো জাপানি শব্দ।
১০.
ফারসি শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
নিচের ছড়ার মাধ্যমে
ফারসি শব্দ মনে রাখা যেতে পারে। সবগুলোই ফারসি শব্দ।
খোদা গুনাহ দোজখ নামাজ পয়গম্বর
কারখান চশমা তারিখ তোষক দফতর।
রোজা ফেরেস্তা ভেস্ত দোকান দরবার
আমদানি রফতানি জিন্দা জানোয়ার।
নালিশ বাদশাহ বান্দা দৌলাত
বেগম মেথর নমুনা দস্তখত।
১১.
আরবি শব্দ মনে রখার কৌশলঃ
নিচের ছড়ার মাধ্যমে
আরবি শব্দ মনে রাখা যেতে পারে। সবগুলোই আরবি শব্দ।
আল্লাহ ইসলাম ওজু গোসল কুরআন
হজ্জ যাকাত হারাম হালাল ঈমান।
মোক্তার রায় জাহান্নাম খারিজ আদালত
আলেম এলেম গায়েব কেচ্ছা কিয়ামত।
ঈদ উকিল ওজর এজলাস ইসনান
কলম কানুন নগদ বাকি লোকসান।
১২.
পরিবর্তিত উচারনের শব্দ মনে রাখার কৌশলঃ
আফিম
(Opium), অফিস (Office), ইস্কুল (School), বাক্স (Box), হাসপাতাল (Hospital), বোতল
(Bottle) ইত্যাদি।
রহিম মিয়া ভুল
করে আফিমের বাক্স
নিয়ে ইস্কুলের অফিসে
প্রবেশ করেছে। সেখানে গিয়ে তার মনে পরলো এখন তো আমার বোতল
নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কথা।
১৩.
ইংরেজি শব্দ (উচ্চারণের ক্ষেত্রে) মনে রাখার কৌশলঃ
ইউনিভার্সিটি,
ইউনিয়ন, কলেজ, টিন, নভেল, নোট, পাউডার, পেন্সিল, ব্যাগ, ফুটবল, মাস্টার, লাইব্রেরি,
স্কুল ইত্যাদি।
|
ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইউনিয়ন টিন ও ব্যাগ নিয়ে
তাদের পুরনো কলেজে গেল ফুটবল খেলতে। মাস্টারকে
দেখে স্কুলের লাইব্রেরি থেকে পেন্সিল ও নোট এনে
দিল। এরপর মাস্টার গায়ে পাউডার মেখে ছাত্রদের সাথে
খেলায় নেমে গেল।
সমাসঃ-সমাস শব্দের অর্থ মিলন। অর্থ সম্বন্ধ আছে এমন একাধিক শব্দের
মিলিত হয়ে একটি নতুন শব্দ তৈরির ব্যাকরণ সম্মত প্রক্রিয়াকেই বলা হয় সমাস।
সমাস
মনে রাখার ছন্দঃ-
-ও-এবং-আর মিলে যদি হয় দ্বন্দ,
সমাহারে দ্বিগু হলে নয় সেটা মন্দ।
যে-যিনি-যেটি-যেটা-তিনি কর্মধারয়
যে-যার শেষে থাকলে তারে বহুব্রীহি কয়।
অব্যয়ের অর্থ প্রাধান্য পেলে অব্যয়ী মেলে,
বিভক্তি লোপ পেলে তৎপুরুষ
তাকে বলে।
সমাস দুই ভাবে নির্ণয় করা যায়।
১) সমস্তপদ দিয়ে
২) ব্যাসবাক্য দিয়ে
১.
দ্বন্দ্ব সমাস চেনার উপায়ঃ-
ব্যাস বাক্যের
মাঝখানে ও/ এবং/আর থাকবে। যেমনঃ আমি, তুমি ও
সে = আমরা
ক) পূর্বপদ ও পরপদের অর্থ স্বাধীন
হবে।
খ) বিভক্তি সমান থাকবে।
গ) এবং, ও, আর (৩টি অব্যয়) থাকলে দ্বন্দ্ব সমাস হবে।
ব্যাসবাক্য লেখার নিয়মঃ পূর্বপদ + ও + পরপদ
উদাহরণঃ
কুশীলব = কুশ ও
লব
দম্পতি = জায়া ও পতি
আমরা = তুমি, আমি ও সে
জন মানব = জন ও মানব
সত্যাসত্য = সত্য ও অসত্য
ক্ষুৎপিপাসা = ক্ষুধা ও পিপাসা
হিতাহিত = হিত ও অহিত
অহি নকুল = অহি ও নকুল
তরু লতা = তরু ও লতা
লাভালাভ = লাভ ও অলাভ
অলুক দ্বন্দ্ব সমাস চেনার উপায়ঃ-
ব্যাসবাক্যের
মাঝখানে ও/এবং/আর ইত্যাদি থাকবে এবং পূর্বপদের
বিভক্তি লোপ পাবে না। যেমনঃ দুধে ও ভাতে = দুধেভাতে।
[দুধে শব্দের বিভক্তি লোপ পায় নি]
ক) পূর্বপদ ও পরপদের অর্থ স্বাধীন হবে ।
খ) উভয় পদে (এ ) বিভক্তি থাকবে
।
গ) ব্যাসবাক্যে ে ও ো থাকলে অলুক দ্বন্দ্ব সমাস হয়।
ব্যাসবাক্য লেখার নিয়মঃ পূর্বপদ + ও + পরপদ
উদাহরণঃ
দুধে ভাতে = দুধে ও
ভাতে
ঘরে বাইরে = ঘরে ও বাইরে
দেশে বিদেশে = দেশে ও
বিদেশে
বনে বাদাড়ে = বনে ও
বাদাড়ে
খেয়াল করুনঃ প্রতিটি ব্যাসবাক্যের শেষে (এ-কার) আছে।
২. দ্বিগু সমাস চেনার উপায়ঃ-
যে সমাসের পূর্বপদ সংখ্যাবাচক
এবং সমাসটি সমষ্টি অর্থ প্রকাশ করে, তাকে দ্বিগু সমাস বলে।
চেনার
উপায়ঃ দ্বিগু শব্দের
“দ্বি” দ্বারা আমরা দ্বিতীয়
বুঝি। অর্থাৎ ২ (সংখ্যা) বুঝাতে “দ্বি” শব্দটি
ব্যবহার করি। ২ হলো একটি সংখ্যা। তাহলে যে শব্দে সংখ্যা
প্রকাশ পারে সেটাকেই “দ্বিগু” সমাস বলে ধরে নিবেন। যেমনঃ
শতাব্দী কোন সমাস? শতাব্দী মানে হল শত অব্দের সমাহার।
অর্থাৎ প্রথমেই আছে “শত” মানে একশ, যা একটি সংখ্যা।
সুতরাং এটি দ্বিগু সমাস। একইভাবে ত্রিপদী-(তিন পদের সমাহার) এটি ও দ্বিগু সমাস। কারণ
এখানে ও একটি সংখ্যা (৩) আছে। এবার যেকোন ব্যাকরণ বই নিয়ে দ্বিগু সমাসের যত উদাহরন
আছে সব এই সুত্রের সাহায্যে মিলিয়ে নিন।
ক) পূর্বপদে সংখ্যাবাচক শব্দ থাকবে।
খ) পরপদে বিশেষ্য থাকবে।
গ) সমস্তপদের অর্থ হবে সমষ্টি বা সমাহার।
ব্যাসবাক্য লেখার নিয়মঃ পূর্বপদ + ও + পরপদ
উদাহরণঃ
তেপান্তর = তে (তিন) প্রান্তরের সমাহার
সেতার = সে (তিন ) তারের সমাহার
ত্রিফলা = ত্রি (তিন) ফলের সমাহার
নবরত্ন = নব (নয়) রত্নের সমাহার
পঞ্চবটী = পঞ্চ (পাঁচ) বটের সমাহার
পঞ্চনদ =পঞ্চ ( পাঁচ ) নদীর সমাহার
পশুরী = পাঁচ সেরের সমাহার
সপ্তর্ষি = সপ্ত (সাত) ঋষির সমাহার
সপ্তাহ = সপ্ত (সাত ) অহের সমাহার
শতাব্দী = শত অব্দের সমাহার
ষড়ভুজ = ষড় (ছয়) ভুজের সমাহার
কোন মন্তব্য নেই
Thank You