Basic Computer & Notes
কম্পিউটারের মৌলিক ধারণাঃ-
আধুনিক বিশ্বে জ্ঞান বিজ্ঞানের
একটি অবিস্মরণীয় উদ্ভাবন হলো কম্পিউটার। বর্তমান সভ্যতার এমন কোন কার্য পরিসর নেই,
যেখানে সার্থকভাবে কম্পিউটারের ব্যবহার করা হয় না। প্রগতিশীল মানব জীবনের প্রত্যেকটি
ধাপের সাথেই কম্পিউটার
জড়িত। মানব সভ্যতার এক
বিশেষ আর্শীবাদ হলো কম্পিউটার।
কম্পিউটারঃ মানব সভ্যতার চূড়ান্ত
পর্বে কম্পিউটার হলো একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্র বিশেষ। অর্থাৎ কম্পিউটার হলো
বহুমুখী কাজের ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র, যার মাধ্যমে উপাত্ত গ্রহণ, বিন্যাস
ও বিশেষণ করার পর ঐ উপাত্তকে
ডিস্কে বা স্মৃতিতে জমা
রাখা হয় প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায় এবং ই-মেইল, ইন্টারনেট কার্য সম্পন্ন হবে। কম্পিউটার
একটি ইংরেজি শব্দ। এটি গ্রীক শব্দ Compute থেকে Computer রূপে উদ্ভব হয়েছে। গ্রীক
Compute অর্থ হলো গণনাকারী ইলেকট্রিক
যন্ত্র। সুতরাং অর্থগতভাবে বলা যায়-সুশৃঙ্খল এবং সুসংবদ্ধ তথ্য সমন্বিত হিসেব নিকাশের
ইলেকট্রিক যন্ত্র হলো Computer । মূলতঃ কম্পিউটার হলো
বিদ্যুৎ চালিত একটি বহুমুখী ক্ষমতা সম্পন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্র যার মাধ্যমে বিশাল তথ্য
ভান্ডার সংগ্রহ করে তার বিন্যাস, বিশেষণ, ব্যাখ্যা, সংযোজন, বিয়োজন করে প্রয়োজনীয় কার্যাদি
সুসম্পন্ন করা হয়। ইংরেজিতে বলা যায়- Computer is a automatic problem
solving machine whose main purpose is data processing or processing information
and which is represented electrically. বর্তমান বিশ্বের সিভিলাইন
সমাজে এর সাহায্যে কম্পোজ করা, গানশোনা, হিসাব-নিকাশ করা, ডাটা সংগ্রহ, বিন্যাস করা,
প্রোগ্রাম তৈরি করা, টিভি দেখা, সময় দেখা, ভিডিও গেইম করা, ই-মেইল এবং ইন্টারনেট ইত্যাদি
কার্যক্রম যথার্থভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
কম্পিউটারের মৌলিক ক্ষমতা
কম্পিউটারের নিজে থেকে
কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই। এটি একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র বিধায় স্বয়ংক্রিয় ভাবে কতিপয়
কাজ করতে পারে। তবে কম্পিউটার মানুষের মতো নয় এবং মানুষের বিকল্পও নয়। মানুষ তথা ব্যবহারকারী
যেভাবে কম্পিউটারকে
নির্দেশ দান করবেন সেভাবে
কম্পিউটার কাজ করে থাকে। এখানে মানুষের বুদ্ধিমত্তাই হলো বড় কম্পিউটার। মানুষের সৃষ্টি
হলো কম্পিউটার। ব্যবহারকারীর নির্দেশনায় কম্পিউটার কাজ করে থাকে। তথ্য ও ফলাফল স্মৃতিতে
ধরে রাখে, উপাত্তের ব্যাখ্যা বিশেষণ করে এবং প্রয়োজনে পুনরায় ব্যক্ত করে। তথাপি অন্যান্য
ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের চাইতে কম্পিউটারের কিছু আলাদা বিশেষত্ব আছে যাদেরকে কম্পিউটারের
মৌলিক ক্ষমতা হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ কম্পিউটারের মৌলিক ক্ষমতা হিসেবে নিচের দৃষ্টিভঙ্গিগুলোকেই
বিবেচনা করা যায়। যেমন-
১. কাজের গতির দ্রুততা;
২. নির্ভুল কাজ করার ক্ষমতা;
৩. দ্রুত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ
ক্ষমতা;
৪. ক্লান্তিহীনতা ও প্রেরণ
ক্ষমতা;
৫. বিশাল স্মৃতির ভাণ্ডার
সংরক্ষণ;
৬. অনুভূতিহীন এবং নির্বোধ
ইলেকট্রনিক যন্ত্র;
৭. বিশ্বায়ন প্রবণতা;
৮. তথ্যের দ্রুত বিশেষণ
ও উপস্থাপন ক্ষমতা।
কম্পিউটারের ব্যবহারিক
গুরুত্ব
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে
কম্পিউটার একটি বিস্ময়কর ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সিভিলাইজ সমাজে জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই
কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজেই আমাদের মানব সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে কম্পিউটারের ব্যবহারিক গুরুত্ব বহুগুণে
বৃদ্ধি পেয়েছে। দিন দিন এর তাৎপর্যও বেড়েই চলছে। মানব সমাজে কম্পিউটার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বা এর ব্যবহারিক
গুরুত্বের কয়েকটি দিক নিম্নে আলোচনা করা হলো-
১. শিক্ষাদানের ক্ষেত্রেঃ
বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার বহুগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষকরে শিক্ষা
গবেষণা, শিক্ষাদান, তথ্য পরিবেশন, তথ্যাদির সংযোজন, সংরক্ষণ, প্রশড়বপত্র প্রণয়ন, মুদ্রণ,
পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, গোপনীয়তা রক্ষা, ই- মেইল ইন্টারনেট এ তথ্যাদির প্রেরণ ইত্যাদি
ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার উন্নয়ন আরো বেশি গতিশীলতা পাচ্ছে।
২. চিকিৎসা ক্ষেত্রেঃ চিকিৎসা
ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার আরেক বিস্ময় সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে রোগের লক্ষণ সংরক্ষণ
সনাক্তকরণ, রোগ নির্ণয়, রোগের প্রতিকার, ঔষধপত্র সনাক্তকরণ ইত্যাদি কার্যে কম্পিউটার
ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া রোগীর যাবতীয় তথ্যাদিও সংরক্ষণ এবং গবেষণাকার্যে ব্যবহার করা
সম্ভব হচ্ছে কম্পিউটারের মাধ্যমে।
৩. যোগাযোগের ক্ষেত্রেঃ
বর্তমান বিশ্বে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হচ্ছে কম্পিউটার। এর মাধ্যমে ই-মেল,
ইন্টারনেট করে মূহুর্তের মধ্যেই বিশ্বের এক প্রান্তের খবর অন্য প্রান্তে চলে যাচ্ছে।
এছাড়া স্যাটেলাইট প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তি আজ
বিশ্বকে একটি গ্রামে পরিণত
করেছে।
৪. অফিস ব্যবস্থাপনায়ঃ
বিভিন্ন শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কিংবা প্রশাসনিক অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
অফিস ব্যবস্থাপনায় কম্পিউটার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্যক্তি কার্যে
কম্পিউটারের ব্যবহার অফিস ব্যবস্থাপনাকে অনেক
বেশি প্রগতিশীল করেছে।
এর মাধ্যমে দ্রুত কাজ করা সম্ভব হয়েছে।
৫. দৈনন্দিন হিসাব নিকাশঃ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন হিসেব নিকাশ তথা গাণিতিক সমস্যার সমাধানে কম্পিউটার
ব্যবহৃত হচ্ছে। গাণিতিক এবং পরিসংখ্যানিক তথ্যাদির ব্যাখ্যা বিশেষণ এবং সমাধান করণে
কম্পিউটারের ব্যবহারের দরুন আমাদের জীবন হয়েছে আরো বেশি গতিশীল, সহজতর এবং কাঙ্খিত।
কাজেই এর ব্যবহারিক গুরুত্ব অনেক বেশি।
৬. তথ্য ব্যবস্থাপনাঃ বর্তমান
যুগকে বলা হয় তথ্য প্রযুক্তির যুগ। এ যুগে কম্পিউটারের মাধ্যমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি,
শিক্ষা, চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্যের ব্যবস্থাপনা হয়ে থাকে।
যার ফলে আমরা আমাদের প্রয়োজনের সময়ে অতি দ্রুত তথ্যাদির সংযোজন ও উপস্থাপন করতে পারি।
৭. প্রকাশনা শিল্পেঃ বর্তমানে
প্রকাশনা শিল্পকে কম্পিউটার অনেক বেশি সমৃদ্ধ করেছে। পাণ্ডুলিপি কম্পোজ, ডাটা প্রসেসিং,
কাটিং, পেস্টিং, নতুনত্ব আনয়ন, কালার প্রসেসিং এবং প্রিন্টিং ইত্যাদি যাবতীয় কার্যে
কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যার
ফলশ্রুতিতে পুস্তক প্রকাশ
করা সহজ এবং দ্রুততর হয়েছে।
৮. প্রোগ্রাম তৈরিতেঃ মানুষের
প্রয়োজনীয় বিভিনড়ব প্রোগ্রাম তৈরিতে কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। বিশেষকরে বিনোদন, ব্যাংকিং,
খেলা, তথ্যাদির সংরক্ষণ, ভিডিও প্রদর্শনের প্রোগ্রাম তৈরিতে কম্পিউটার অতীব গুরুত্বপূর্ণ
উপাদান। এটির ব্যবহারে জীবন হয়েছে ধন্য।
৯. ফলাফল প্রকাশ ও সনদ
প্রদানেঃ বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ এবং দ্রুত সনদ প্রদানে কম্পিউটারের ব্যবহার
করা হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা স্বল্প সময়ে তাদের সনদ কিংবা ফলাফল শীট হাতের কাছে
পাচ্ছে। শিক্ষার উন্নয়ন কার্য আরো
বেশি গতিশীল হচ্ছে। সংযোজন
হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির।
১০. ফাইল সংরক্ষণঃ বিভিন্ন
অফিস আদালতের জরুরি কোন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সংরক্ষণে কম্পিউটারের অবদান অনস্বীকার্য।
এটি নিরাপদ ও দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে গোপণীয় তথ্যাদির সংরক্ষণে কম্পিউটার
হলো গোপন এবং বিশ্বস্ত বন্ধু।
মানব সভ্যতার বিকাশের সাথে
সাথে আমাদের জীবন হয়েছে প্রগতিশীল। বিশ্বটা হয়েছে গোবাল
ভিলেজ। এক্ষেত্রে কম্পিউটার
প্রযুক্তির ব্যবহার মানব জীবনকে আরো বেশি প্রগতিশীল করেছে। অর্থাৎ, যান্ত্রিক সভ্যতায়
মানবজীবনকে বিকশিত করণে
কম্পিউটারের অবদান অনস্বীকার্য।
কম্পিউটারের ক্রবিকাশের
ইতিহাস (সংক্ষিপ্তরূপে)
কম্পিউটারের ক্রমবিকাশের
ইতিহাস অনেক পুরানো। কম্পিউটারের উদ্ভব এবং বিস্তারের পেছনে মানুষের শতাব্দীর পর শতাব্দী
পর্যন্ত প্রচেষ্টা অব্যহত ছিল। এখনও মানুষ আরো উন্নত আরো বেশি কার্যক্ষম কম্পিউটার
কিভাবে উদ্ভাবন করা যায় তার
প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে।
মূলতঃ প্রাচীন গণনা যন্ত্র হতেই এর উদ্ভাবনী শুরু হয়। কম্পিউটারের ক্রমবিকাশের ইতিহাসঃ
মানুষের প্রয়োজনীয় গণনা কার্যক্রম হতেই কম্পিউটার উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা শুরু হয়। প্রাচীনকালে
মানুষ গণনার জন্য নুড়ি, ঝিনুক, দড়ির গিট, ছড়ির গিট ইত্যাদিকে গণনার কার্যে ব্যবহার
করত। প্রাচীন রোমনরা সরু চোঁঙে নুড়ি পাথর ফেলে গণনা করত এবং তা স্থানান্তরিত করত।
রোমান ভাষায় এসব নুড়িপাথরকে বলা হতো
ক্যালকুলি (Calculi)। আর এ ক্যালকুলি হতে
ইংরেজি ক্যালকুলেটর শব্দটি উদ্ভব হয়েছে। এর কয়েক হাজার বছর পরে উদ্ভাবিত হয়েছে অ্যাবাকাস
নামে গণনার যন্ত্র। অ্যাবাকাস একটি প্রাচীন গণনার যন্ত্র। এটাকেই কম্পিউটার ইতিহাসের
প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। মূলতঃ অ্যাবাকাস
হতেই কম্পিউটার ইতিহাসের
ক্রম অগ্রযাত্রা শুরু হয়। অ্যাবাকাস ছিল ফ্রেমে আটকানো স্থান পরিবর্তন যোগ্য গুটির
সমন্বয়। খ্রীষ্ট পূর্ব ৫০০ অব্দে মিশর কিংবা চীনে সর্বপ্রথম এটি উদ্ভাবিত হয়েছিল। ১৬১৪
সালে স্কটল্যান্ডের গণিতবিদ নেপিয়ার লগারিদম সারণী আবিষ্কার করে কাঠির ব্যবহার করে
গণনার একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেন যাকে নেপিয়ারের হাড় (Napiers Bone) বলা হতো। নিউটন তার উনড়বয়ন
সাধন করেন। অন্যদিকে ফরাসী যুবক বেইজ
১৬৪২ সালে উদ্ভাবন করেন
প্যাস্কাল নামক একটি গণনার যন্ত্র। তারপর ১৬৭০ সালে জার্মান গণিতবিদ গট ফ্রাইড ভন লিবমিজ
উদ্ভাবন করেন লিবমিজ নামক গণনার যন্ত্র। যার সাহায্যে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি
করা সম্ভব হয়েছে। তারপর ১৭৮৬ সালে জার্মানীর মূলার উদ্ভাবন করে আরো উন্নত গণনার যন্ত্র
ডিফারেন্স ইঞ্জিন। যাকে প্রথম ক্যালকুলেটর হিসেবে ধরা হয়। পরবর্তীতে চালর্স ব্যাবেজ
১৮১২ সালে পরিপূর্ণ গণনার যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। যাকে আধুনিক কম্পিউটারের পূর্বরূপ হিসেবে
ধরা যায়। ১৮৮৭ সালে মার্কিন পরিসংখ্যানবিদ ডঃ হারম্যান হলেরিথ আদম শুমারী কার্যে পাঞ্চকার্ড
ব্যবহার করে কম্পিউটারের
অগ্রযাত্রাকে আরো বেশি
সুষমাণ্ডিত করেন। তার নেতৃত্বে গঠিত হয় “টেবুলেটিং কোম্পানী” যার মাধ্যমে কম্পিউটার
শিল্পের ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির সূত্রপাত ঘটে। পরে এ কোম্পানী এবং আরো কয়েকটি কোম্পানী
মিলে কম্পিউটার উদ্ভাবন এবং
বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে গঠিত
হয় ওইগ বা ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিন নামে একটি বৃহৎ কোম্পানী। তখন থেকেই বাজারে
এসে যায় এনালাইটিক্যাল ইঞ্জিন নামে নতুন ধরনের গণনার যন্ত্র।
১৯৪৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের
পেনসিলভার্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ জন মর্ডসলি এবং তার ছাত্র প্রেসপার একার্ট
ENIAC নামে একটি গণনার যন্ত্র
উদ্ভাবন করেন। এর ওজন ছিল ৩০ টন এবং ভ্যাকুম টিউব ছিল ১৯০০টি। যন্ত্রটি চালানোর জন্য
বিদ্যুৎশক্তির প্রয়োজন
হতো ১৩০ কিঃ ওয়াঃ আর জায়গার প্রয়োজন ছিল ১৫০০ বর্গফুট। ১৯৫০ পর্যন্ত এর ব্যবহার চালু
ছিল। জন মাউসলি এবং প্রেসপার একাটর্ ১৯৫১ সালে
আবার উদ্ভাবন করেন UNIVAC. যার ব্যবহার ক্ষমতা ছিল
অত্যন্ত
বৈচিত্র্যময়। এটিই হলো
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তৈরি প্রথম ইলেকট্রনিক কম্পিউটার। এতে ক্রিস্টাল ডায়োড সুইচ এবং
ভ্যাকুয়াম টিউব সুইচ ব্যবহার করা হয়। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এর সাহায্যে
পড়া, গণনা এবং তথ্য লেখার কাজ করা
যায়। প্রকৃতপক্ষে তখন হতেই
বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কম্পিউটার তৈরি করতে থাকে এবং বাজার জাত করে।
১৯৭১ সালের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কতিপয় কোম্পানী আরো বেশি উৎপাদনক্ষম এবং কার্যক্ষম
কম্পিউটার উৎপাদন ও
বাজারজাত করতে শুরু করে।
এদিকে এশিয়ার অর্থনৈতিক কিং জাপানও এক্ষেত্রে মোটেও পিছিয়ে নেই। তারাও বিভিন্ন মডেলের
বহুল কার্যক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার উৎপাদন ও বাজারজাত করণে বিশ্বকে দখল করে নিয়েছে।
তাদের উৎপাদিত
কম্পিউটারগুলো দামে সস্তা
অত্যন্ত দ্রুত গতি সম্পন্ন এবং মজবুত। বিশ্বের মানুষ জাপানের কম্পিউটারের প্রতি আরো
বেশি ঝোঁকে পড়ে। কম্পিউটারের ক্রবিবর্তনের ইতিহাস নাতিদীর্ঘ। তথাপি জানার জন্য এখানে
সংক্ষিপ্তরূপে কম্পিউটারের ইতিহাস উপস্থাপন করা হলো। বর্তমানে অত্যন্ত ছোট চিপস ব্যবহার
করে অত্যাধুনিক এবং ছোট আকারের কম্পিউটার উদ্ভাবিত করছে। এখন আর কম্পিউটার শুধু গণনার
যন্ত্র নয়। এর ব্যবহার অত্যন্ত বৈচিত্র্যমুখী হয়েছে। যার কল্যাণকর দিক অসীম।
কম্পিউটারের অগ্রগতির পেছনে
চালর্স ব্যাবেজ (কম্পিউটারের জনক) এর অবদানঃ
কম্পিউটার বিশ্বের উন্নতির
সাথে যে মহান ব্যক্তির নাম জড়িয়ে রয়েছে তিনি হলেন চালর্স ব্যাবেজ। কম্পিউটারের আধুনিকায়নের
সাথে চালর্স ব্যাবেজ এর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি মূলতঃ একজন ইংরেজ গণিতবিদ। তিনিই সর্বপ্রথম
শক্তিশালী গণনার যন্ত্রের উদ্ভাবন করেন। যার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার উদ্ভাবন সহজ
হয়।
চালর্স ব্যাবেজঃ চালর্স ব্যাবেজ ছিলেন ইংল্যান্ডের
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক। তিনি ১৭৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৭১
সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সারাজীবন গবেষণা করে একটি শক্তিশালী গণনার যন্ত্র আবিষ্কার
করেন যার
নাম ছিল ডিফারেন্সিয়াল
ইঞ্জিন বা বিয়োগ ফল ভিত্তিক গণনার যন্ত্র। তিনি এতে পাঞ্চকার্ডের ব্যবহার করে কম্পিউটারের
আধুনিকায়নের সূত্রপাত ঘটান। তাই তাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়। চালর্স ব্যাবেজ
তার গবেষণা কার্যের জন্য বৃটিশ সরকার কর্তৃক বিশাল অনুদান পেয়েছিলেন।
চালর্স ব্যাবেজের অবদানঃ ১৮১২ সালে চালর্স ব্যাবেজ
লগারিদমের সূত্রকে প্রয়োগ করে কম্পিউটারের ডিফারেন্সিয়াল ইঞ্চিন উদ্ভাবন করেন। এতে
তিনি এক সারি প্যাসকেল ধরণের গণনার যন্ত্র এমনভাবে সংযুক্ত করেন যে একটির Output বা ফলাফল
অপরটির Input বা যোগান হিসেবে কাজ করবে।
চালর্স ব্যাবেজ জীবনের দশ বছর গবেষণা করে যে ডিফারেন্সিয়াল ইঞ্জিন উদ্ভাবন করেছিলেন
তার কার্যক্ষমতা যথার্থ না হওয়ায় পরবর্তীতে তিনি নতুন ধরণের যন্ত্র আবিষ্কার মনোযোগী
হন। তাঁর গবেষণা কার্যক্রম ছিল সুদীর্ঘ। চালর্স ব্যাবেজ জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত যে
যন্ত্র উদ্ভাবন কাটিয়েছেন সেটি হলো অ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিন বা বিশেষনী যন্ত্র। চালর্স
ব্যাবেজের এ উদ্ভাবিত চিন্তাশক্তি কিংবা মেশিন পরিকল্পনা আধুনিক কম্পিউটারের মূলনীতির
উপর সুপ্রতিষ্ঠিতি পায়। অর্থাৎ তার পরিকল্পনার সূত্র ধরেই কম্পিউটার বিশ্বের আধুনিকায়ন
সম্ভব হয়েছে। এজন্যই চালর্স ব্যাবেজকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়।
চালর্স ব্যাবেজ তার মেশিন
পরিকল্পনায় আধুনিক কম্পিউটারের মতো নিয়ন্ত্রণ অংশ, গাণিতিক অংশ, স্মৃতি অংশ, গ্রহণমুখ
অংশ, নির্গমনমুখ অংশ চিহ্নিত করেছিলেন। যদিও ব্যাবেজের পরিকল্পনা ছিল উন্নত এবং বৈজ্ঞানিক
তথাপি তখনও যুগান্তকারী প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়নি বিধায় তার পরিকল্পনাকে তখন বাস্তবায়ন
করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে তখনকার অন্যান্য বিজ্ঞানীরা ব্যাবেজ পরিকল্পনাকে ব্যাবেজের
মূর্খতা (Babbage’s
Folly) বলে উপহাস করেছিল। সরকারও
তার গবেষণার অনুদান বন্ধ করেছিল।
প্রকৃত পক্ষে চালর্স ব্যাবেজের
চিন্তা এবং পরিকল্পনা ছিল শত বছরের আগাম চিন্তা। অর্থাৎ কম্পিউটার জগতের শত বছর পরে
কিরূপ উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন হতে পারে তারই প্রতিফলন করেছিলেন ব্যাবেজ তার কম্পিউটার
পরিকল্পনায়। তবে তাঁর
চিন্তা প্রসূত পরিকল্পনা
তার মৃত্যুর পর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছিল। তাঁর অসংখ্য চিত্র এবং নকশা আধুনিক কম্পিউটার
বিকাশের প্রেরণা যুগিয়েছে। ব্যাবেজের চিন্তার একশ বছর পর কম্পিউটারের যে পর্যায়ে উন্নীত
হয়েছে সেরূপ কম্পিউটার চিন্তা তিনি একশ বছর আগে করেছিলেন। তাই তিনি আধুনিক কম্পিউটারের
জনক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
কম্পিউটারের উন্নয়নে অনেক
বিজ্ঞানীর নামই বিশেষভাবে জড়িত রয়েছে। তবে চালর্স ব্যাবেজের অবদান অনস্বীকার্য। যদিও
এ বিজ্ঞানী জীবদ্দশায় এর স্বীকৃতি পেয়ে যেতে পারেননি। পৃথিবীতে তিনিই একমাত্র বিজ্ঞানী
যিনি সারা জীবন একটি মাত্র যন্ত্র
উদ্ভাবনেই কাটিয়েছেন, তবু
সফল হতে পারেন নি। তাই তিনি জীবদ্দশায় সতীর্থদের উপহাসের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন।
বিভিন্ন ধরনের সফ্টওয়্যার
বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারিক
গুরুত্বের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের সফ্টওয়্যারকে প্রধানত দুটো শ্রেণীতে বিভক্ত করা
যায়। যেমনঃ
ক. সিস্টেম সফ্টওয়্যার
(System
Software)
খ. প্যাকেজ বা ব্যবহারিক
সফ্টওয়্যার (Application
software)
ক. সিস্টেম সফ্টওয়্যারঃ কম্পিউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ
এবং অবিচ্ছেদ্য ইউনিট হচ্ছে সিস্টেম সফ্টওয়্যার। অর্থাৎ কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের
কাজের সমন্বয় রক্ষাকারী ও ব্যবহারিক নির্বাহের সংযোগ রক্ষাকারী ইউনিটকেই সিস্টেম সফ্টওয়্যার
বলা হয়। কম্পিউটার পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রোগ্রাম সিস্টেম সফ্টওয়্যার এর
অর্ন্তভুক্ত।
অপারেটিং সিস্টেম, সিস্টেম
সফ্টওয়্যারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সিস্টেম সফ্টওয়্যারের ইউনিটঃ
সিস্টেম সফ্টওয়্যার প্রধানত তিনটি ইউনিট রয়েছে। নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হলো-
১. সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রাম।
২. সিস্টেম সহায়ক প্রোগ্রাম।
৩. সিস্টেম উনড়বয়ন প্রোগ্রাম।
খ. প্যাকেজ বা ব্যবহারিক
সফ্টওয়্যারঃ কম্পিউটারে সাধারণত ব্যবহারিক
সমস্যা সমাধান বা ডাটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত প্রোগ্রামকেই ব্যবহারিক সফ্টওয়্যার
বা প্যাকেজ সফ্টওয়্যার বলা হয়। এ প্যাকেজ সফ্টওয়্যাকে আবার এপ্লিকেশন সফ্টওয়্যার নামেও
অভিহিত করা হয়ে থাকে। কম্পিউটার ব্যবহারকারী নিজেই নিজের কম্পিউটারের ভাষা
ব্যবহার করে প্রয়োজনীয়
যে কোন সমস্যা সমাধান করে অথবা ডাটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রোগ্রাম রচনা করতে পারেন।
ব্যবহারিক সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক রকম প্রোগ্রাম তৈরি করে বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে
বাজারে ছাড়া হয়। ওয়ার্ড প্রসেসিং, স্প্রেডসিড, ডাটাবেজ ইত্যাদি প্যাকেজ প্রোগ্রাম বহুল
ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয়।
প্রকারভেদঃ প্যাকেজ সফ্টওয়্যারকে
প্রধানত দু’টো ভাগে বিভক্ত করা হয়ে
থাকে। যেমন-
১. একক প্রক্রিয়া প্যাকেজ
সফ্টওয়্যার।
২. সমন্বিত প্রক্রিয়ার
প্যাকেজ সফ্টওয়্যার।
১. একক প্রক্রিয়া প্যাকেজঃ
শুধুমাত্র এক ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য একক প্রক্রিয়া প্যাকেজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
প্রোগ্রাম ব্যবহার করে সহজেই সমস্যা সমাধান করা যায়। সাধারণত লিপি প্রস্তুতের জন্য
ব্যবহৃত ওয়ার্ডস্টার, বক্সরাইটার,
ওয়ার্ড, ওয়ার্ড পারফেক্ট,
গ্রাফ, বারচার্ট, পাই-চার্ট, ইউনিট এর জন্য ব্যবহৃত গ্রাফ, গ্রাফ প্যার্টান ইত্যাদি
একক প্রক্রিয়া প্যাকেজ প্রোগ্রামের উদাহরণ।
২. সমন্বিত প্রক্রিয়া প্যাকেজঃ
একাধিক প্রক্রিয়া সমাধানের জন্য অনেক রকম বাণিজ্যিক প্যাকেজ পাওয়া যায়। এ ধরনের প্যাকেজ
প্রোগ্রামকে সমন্বিত প্রক্রিয়া প্যাকেজ বলা হয়। এতে বিভিন্ন প্রক্রিয়া সমাধানের জন্য
অনেক রকম প্রোগ্রামের সমন্বয় করা হয়ে থাকে। একই ফাইলের ডাটা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ
করতে হলে একীভূত প্যাকেজ সহায়ক হয়।
লোটাস ১,২,৩ মাইক্রোসফ্ট,
এক্সেল, ওয়ার্কসিট ইত্যাদি কয়েকটি জনপ্রিয় সমন্বিত প্যাকেজ প্রোগ্রাম।
তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়াবলী
তথ্য প্রযুক্তি কাকে বলে?
উঃ কম্পিউটার
এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, একত্রীকরণ, সংরক্ষন, প্রক্রিয়াকরণ
এবং বিনিময় বা পরিবেশনের ব্যবস্থাকে তথ্য প্রযুক্তি বলে।
যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে?
উঃ যে প্রযুক্তির
মাধ্যমে কোনো তথ্য এক স্থান হতে অন্য স্থানে কিংবা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে
স্থানান্তর কিংবা একজনের ডেটা অন্যের নিকট স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায়াকে যোগাযোগ প্রযুক্তি
বলে।
তথ্য প্রযুক্তির অবদান সমূহ লেখ।
উঃ ক) অপচয়
রোধকরে।
খ) সময় সাশ্রয়ী
হয়।
গ) তথ্যের
প্রাপ্যতা সহজ হয়।
ঘ) তাৎক্ষনিক
যোগাযোগ সম্ভব হয়। যেমনঃ ফোন, ফ্যাক্স,
ইন্টারনেট,
ই-মেইল, এসএমএস, এমএমএস প্রভৃতি।
ঙ) সর্বক্ষেত্রে
দক্ষতাবৃদ্ধি পায়।
চ) ব্যবসায়-বানিজ্যে
লাভজনক প্রক্রিয়াসৃষ্টিকরে।
ছ) মানব
সম্পদের উন্নয়ন ঘটায়।
জ) শিক্ষার্থীরা
ঘরে বসেই অনলাইনে বিশ্বের বিভিন্ন নামী-দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহন করতে
পারবে।
ঝ) ঘরে বসেই
বিদ্যুৎ,পানি, গ্যাস, মোবাইল ফোনের বিল সহ সকল কাজ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন
করা হচ্ছে।
তথ্য প্রযুক্তির উপাদান সমূহের নাম
লেখ।
উঃ
ক) কম্পিউটার
ও আনুসঙ্গিক যন্ত্রপাতি।
খ) কম্পিউটিং।
গ) রেডিও,
টেলিভিশন, ফ্যাক্স,।
ঘ) অডিও
ভিডিও।
ঙ) স্যাটেলাইট।
চ) কম্পিউটার
নেটওয়ার্ক।
ছ) ইন্টারনেট।
জ) আধুনিক
টেলিযোগাযোগ ।
ঝ) মডেম
ইত্যাদি।
কম্পিউটার কাকে বলে?
উঃ Computer
শব্দটি গ্রিক শব্দ থেকে এসেছে। কম্পিউট (Compute) শব্দ থেকে Computer শব্দটি উৎপত্তি। Computer শব্দের অর্থ গণনাকারী। অর্থ্যাৎ কম্পিউটার
শব্দের আভিধানিক অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। শুরুতে কম্পিউটারের
পরিচয় ছিল
গণনা যন্ত্রের। কিন্তু এখন আর কম্পিউটারকে গণনা যন্ত্র বলা যায় না। কম্পিউটার এমন একটি
যন্ত্র যা তথ্য গ্রহন করে এবং বিভিন্ন প্রক্তিয়ার মধ্যমে তা বিশ্লেষন এবং উপস্থাপন
করে।
অথবা, এটি
এমন একটি যন্ত্র যা তথ্য গ্রহন করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যমে তা বিশ্লেষন করে
গাণিতিক ও যুক্তিমূলক কাজ সঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে পারে তাকে কম্পিউটার বলে।
কম্পিউটার আবিস্কারকঃ ১৯৩০ সালে মার্ক-১ ডঃ হাওয়ার্ড এইচ
আইকেন (Howard
H. Aiken)।
কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য সমূহ লেখ।
উঃ ক) দ্রুতগতি।
খ) নির্ভূলতা।
গ) সূক্ষ্ণতা।
ঘ) বিশ্বাসযোগ্যতা।
ঙ) ক্লান্তিহীনতা।
চ) স্মৃতিশক্তি।
ছ) স্বয়ংক্রিয়তা।
জ) যুক্তিসংগত
সিদ্ধান্ত।
ঝ) বহুমুখিতা।
ঞ) অসীম
জীবনীশক্তি।
কম্পিউটারের কাজ করার গতি কি হিসেবে
নির্ণয় করে?
উঃ কম্পিউটার
কাজ করে “ন্যানো সেকেন্ডে” যা ১ সেকেন্ডের ১০০ কোটি ভাগের এক
ভাগ (10-9 সেকেন্ড)।
রেডিও কী?
উঃ রেডিও একটি গ্রাহকযন্ত্র। রিসিভারের
মাধ্যমে বেতার তরঙ্গ ধারন করে তাকে এমপ্লিফাই করে বাজিয়ে রেডিওতে শোনা যায়। দূরবর্তী
স্থানে বেতার তরঙ্গ পাঠিয়ে শব্দ স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে বহুল জনপ্রিয় হলো FM (Frequency
Modulation) রেডিও।
রেডিও আবিস্কারকঃ ১৮৯৪ সালে গুগলিমও মারকনি (Guglielmo Marconi)।
টেলিভিশন কী?
উঃ টেলিভিশন
হলো ছবি ও শব্দ প্রেরকযন্ত্র। এটি একটি একমূখী যোগাযোগ ব্যবস্থা। এতে একটি নির্দিষ্ট
সম্প্রচার কেন্দ্র থেকে রেকর্ডকৃত অথবা ভিডিও ক্যামেরা দিয়ে ধারনকৃত ইলেকট্রিক সিগন্যাল
পাঠানো হয় এবং উক্ত সম্প্রচার কেন্দ্রের চ্যানেলে সংযোগকৃত টেলিভিশন সেটে তথ্য ছবি,
শব্দ এবং
লাইভ প্রোগ্রাম
ইত্যাদি দেখা যায়।
আবিস্কারকঃ
১৯২৬ সালে জন লোগি বেয়ার্ড (John Logie Baird)।
স্যাটেলাইট কী ও এটি কত ভাগে ভাগ করা
হয়েছে?
উঃ স্যাটেলাইট
হলো একটি কৃত্রিম উপগ্রহ যা পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করে এমন স্থানে স্থাপিত বিশেষ
ধরনের তারবিহীন রিসিভার/ট্রান্সমিটার হলো স্যাটেলাইট।
আবিস্কারকঃ ১৯৫৭ সালে (Verner E.Suomi) ভারনার ই সওমি।
স্যাটেলাইটের
কাজের উপর ভিত্তি করে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
যথাঃ
ক) ওয়েদার
স্যাটেলাইট।
খ) কমিউনিকেশান
স্যাটেলাইট।
গ) ন্যাভিগেশান
স্যাটেলাইট।
ঘ) আর্থ
অবর্জাভেশন স্যাটেলাইট।
ঙ) মিলিটারী
স্যাটেলাইট।
ইন্টারনেট কী?
উঃ ইন্টারনেট
হলো পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা।
অথবা,
একটি কম্পিউটারের
সাথে আরেকটি কম্পিউটারের
যোগাযোগকে
নেটওয়ার্ক বলে। আর একটি নেটওয়ার্কের সাথে এক বা একাধিক নেটওয়ার্কের সংযোগ হয়ে বিশ্বব্যাপী
বিস্তৃত যোগাযোগকে ইন্টারনেট বলে।
আবিস্কারকঃ ১৯৬৯ সালে ভিনটন জি কার্ফ (Vinton G.Cerf)
ই-মেইল (Email) কী?
উঃ ই-মেইল
হল ইলেকট্রনিক মেইল (Electronic
Mail) এর সংক্ষিপ্ত রুপ।
ই-মেইল হলো কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য
আদান প্রদান করার প্রক্রিয়া। অথবা,
Electronic Mail কে সংক্ষেপে E-Mail বলা হয়। এটি একটি উন্নত ও দ্রুত বৈদ্যুতিক
ডাক ব্যবস্থা। এটি এমন এক নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে তাৎক্ষনিকভাবে
বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে সংবাদ আদান- প্রদান করা যায়। কয়েকটি Mail Address হচ্ছে gmail, yahoo,
hotmail, outlook, zoho, yandex, proton,icloud, ইত্যাদি
আবিস্কারকঃ ১৯৭১ সালে রে টমলিনসন (Ray Tomlinson) Arpanet এর মাধ্যমে E-mail প্রেরন করেন এবং @ চিহ্ন প্রথম ব্যবহার করেন।
রিজার্ভেশন সিস্টেম (Reservation System) কাকে বলে?
উঃ যোগাযোগ
ক্ষেত্রে রিজার্ভেশন সিস্টেম বর্তমানে বহুল প্রচলিত। ইলেকট্রনিক উপায়ে আসন বিন্যস্ত
করাকে রিজার্ভেশন সিস্টেম বলে।
যেমনঃ বিমান,
রেলওয়ে, দূরপাল্লার বাস, হোটেলের সীট অগ্রিম বুকিং ইত্যাদি।
মোবাইল ফোন কাকে বলে?
উঃ মোবাইল
ফোন হলো একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা বেস স্টেশনের একটি সেলুলার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে
ফুল ডুপ্লেক্স দ্বিমুখী রেডিও টেলিকমিউনিকেশন্সকে ব্যবহার করে থাকে।
এ ফোনকে
মোবাইল, সেলুলার ফোন, সেলফোন নামেও ডাকা হয়।
আবিস্কারকঃ ১৯৭৩ সালে মার্টিন কুপার Martin Cooper)|
টেলিকনফারেন্সিং (Teleconferencing) কাকে বলে?
উঃ টেলিফোন
সংযোগ ব্যবহার করে কম্পিউটার অডিও, মডেম-ভিডিও যন্ত্রের সাহায্যে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন
স্থান থেকে কোন সভায় অংশগ্রহন করার পদ্ধতি হচ্ছে টেলিকনফারেন্সিং। টেলিকনফারেন্সিং
৩ প্রকার। যথাঃ
ক) পাবলিক
কনফারেন্স।
খ) ক্লোজড
কনফারেন্স।
গ) রীড অনলি
কনফারেন্স।
আবিস্কারকঃ ১৯৭৫ সালে মরিল টারফ (Morrill Tariff)।
ভিডিও কনফারেন্সিং কাকে বলে?
উঃ ভিডিও
কনফারেন্সিং হলো এক সারি ইন্টারঅ্যাকটিভ টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি যেগুলো দুই বা ততোধিক
অবস্থান হতে নিরবিচ্ছিনড়ব দ্বিমুখী অডিও এবং ভিডিও সম্প্রচারের মাধ্যমে একত্রে যোগাযোগ
স্থাপনের সুযোগ দেয় তাকে ভিডিও
কনফারেন্সিং
বলে। বর্তমানে সর্বাধিক ব্যবহৃত ভিডিও কনফারেন্সিং সফটওয়্যার/এপস হলোঃ Zoom Cloud
Meeting. করোনা মহামারীর জন্য স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল প্রকার প্রতিষ্ঠান
বন্ধ থাকায় যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে এই ক্লাউড মিটিং সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করে।
ইন্টারনেটকে বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড
বলা হয় কেন?
উঃ ইন্টারনেটের
মাধ্যমেই মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করে একে অপরের সাথে সহজে যোগাযোগ
করতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্য আদান প্রদান করতে পারে। এইজন্যই ইন্টারনেট হচ্ছে
বিশ্বগ্রাম সংযুক্ততার মেরুদন্ড। অথবা,
বিশ্বগ্রাম
হচ্ছে এমন একটি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন যেখানে কমিউনিটির সকল সদস্য ইন্টারনেট
তথা তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান
উন্নতির ফলে বসবাসযোগ্য পৃথিবী ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে, যেন একটি গ্রামে পরিনত হচ্ছে। আর
এর
প্রধান সহায়ক
শক্তি হচ্ছে তথ্য ইন্টারনেট। সুতরাং বলা যায়, বিশ্বগ্রাম হচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবস্থা।
অতএব বলা যায় যে ইন্টারনেটই বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড।
বিশ্বগ্রাম (Global
Village) কাকে বলে?
উঃ বিশ্বগ্রাম
হচ্ছে এমন একটি সামাজিক বা সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা, যেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষই
একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে
তারা সহজেই তাদের চিন্তা-চেতনা,
অভিজ্ঞতা,
সংস্কৃতিক-কৃষ্টি ইত্যাদি বিনিময় করতে পারে ও একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে।
অথবা, Global Village শব্দের অর্থ বিশ্বগ্রাম । Global Village হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর
এমন একটি পরিবেশ, যেখানে দূরবর্তী স্থানে অবস্থান করেও পৃথিবীর সকল মানুষই একটি একক
সমাজে বসবাস করার সুবিধা পায় এবং
একে অপরকে
সেবা প্রদান করে থাকে।
আবিস্কারকঃ ১৯৬২ সালে তার প্রকাশিত বই দ্যা গুটেনবার্গ
গ্যালাক্সি (The
Gutenberg Galaxy) বিশ্বগ্রাম
শব্দটি তুলে ধরেন। কানাডিয়ান দার্শনিক ও লেখক হারবার্ট মার্শাল ম্যাকলুহান (Herbert Marshall
McLuhan) ।
বিশ্বগ্রামের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
লেখ।
উঃ বিশ্বগ্রামের
সুবিধা সমূহঃ
১) মোবাইল
ফোন, ইন্টারনেটের কারণে বিশ্বগ্রাম হওয়ায় বিশ্ব আজ মানুষের হাতের মুঠোয়।
২) বিভিন্ন
দেশ এবং তাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্কে জানা যায়।
৩) ক্লিক
করে মুহূর্তেই যে কোন দেশের তথ্য জানা যায়।
৪) মুহূর্তের
মধ্যে বিশ্বের যে কোন স্থানের কোন ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করা যায়।
৫) মানুষের
কাজের দক্ষতা এবং গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৬) সহজেই
বিভিন্ন গবেষনার ফলাফল জানা যাচ্ছে।
৭) ঘরে বসেই
বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকা পড়া সহ সকল কাজ করা যায়।
৮) পৃথিবীর
যেকোনো স্থানে বসে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়।
৯) ই-ব্যাকিং,
ই-লার্নিং, ই-মেইল, ই-বুক, ই-সংবাদ ইত্যাদি সেবা সহজেই পাওয়া যায়।
১০) ঘরে
বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোসিং করে উপার্জন করা যায়।
বিশ্বগ্রামের অসুবিধা সমূহঃ
১) ইন্টানেট
হ্যাকিং করে তথ্য চুরি হওয়া।
২) অসত্য
তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃস্টি করতে পারে।
৩) ব্যাংক
ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য চুরি করা। ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি।
৪) সাইবার
আক্রমন সংঘটিত হওয়া।
৫) সহজে
সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ফলে কোন দেশের নিজস্ব
সংস্কৃতির
বিলুপ্তি ঘটা।
৬) প্রযুক্তির
বেশি ব্যবহারের ফলে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়া।
৭) জনগন
কোন কিছু পড়ে এর সুত্রে যাচাই না করে সত্য বলে গ্রহন করতে পারে।
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহ
বর্নণা দাও।
উঃ নিচে
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার প্রধান প্রধান উপাদানসমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
১) হার্ডওয়্যার
(Hardware)।
২) সফটওয়্যার
(Software)।
৩) কানেকটিভিটি
(Connectivity)।
৪) ডেটা
(Data)।
৫) মানুষের
জ্ঞান বা সক্ষমতা (Capacity)।
হার্ডওয়্যার (Hardware) যে
সকল যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা যায় ও অনুভব করা যায় তাকে হার্ডওয়্যার বলে। হার্ডওয়্যার
বলতে এখানে কম্পিউটার আর এক সাথে যন্ত্রপাতি, মোবাইল ফোন, স্মার্ট ফোন, অডিও-ভিডিও
রেকর্ডার, স্যাটেলাইট, রেডিও, টেলিভিশন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে
সম্পৃক্ত
ডিভাইস সমূহ।
সফটওয়্যার (Software) সফটওয়্যার
হলো এমন একটি সুক্ষ জিনিস যা শুধুমাত্র অনুভব করা যায় কিন্তু স্পর্শ করা যায় না তাকে
সফটওয়্যার বলে। সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজিং
সফটওয়্যার, কমিউনিকেটিং সফটওয়্যার এবং প্রোগ্রামিং ভাষা।
কানেকটিভিটি (Connectivity) বিশ্বগ্রামের
গ্রামের
মেরুদন্ড
হলো নিরাপদভাবে রিসোর্স শেয়ার করার ইন্টারনেট সংযুক্ততা বা কানেকটিভিটি যার মাধ্যমে
বিভিন্ন উপাত্ত ও তথ্য প্রতিটি মানুষের নিকট পৌঁতে পারে। এক্ষেত্রে টেলিকমিউনিকেশন,
ব্রডকাষ্টিং এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে ইন্টারনেট কানেকশন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে
থাকে।
ডেটা (Data) ডেটা
হচ্ছে অগোছালো বা এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু তথ্য বা Information. ডেটাকে প্রক্রিয়াকরন বা প্রসেসিং
করে ব্যবহারযোগ্য ইনফরমেশন বা তথ্যে পরিনত করা হয়।
মানুষের জ্ঞান বা সক্ষমতা (Capacity) বিশ্বগ্রামের
উপাদানগুলো
মধ্যে মানুষের জ্ঞান বা সক্ষমতা অন্যতম। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবকাঠামো ব্যবহার
করার জ্ঞান না থাকলে এর সুফল পাওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং বলা যায়- যে কোনো বিষয়ে জ্ঞান
আহরণ বা বিতরনের জন্য এই প্রযুক্তিতে মানুষের জ্ঞান বা সক্ষমতা অত্যাবশ্যক।
বিশ্বগ্রামের ধারনা সংশ্লিষ্ট প্রধান
উপাদানসমূহ গুলো কি কি?
উঃ প্রধান
প্রধান উপাদানগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
১) যোগাযোগ(Communication) ।
২) কর্মসংস্থান
(Employment)।
৩) শিক্ষা
(Education)।
৪) চিকিৎসা
(Care
And Treatment)।
৫) গভেষনা
(Research)।
৬) অফিস
(Office)।
৭) বাসস্থান
(Residence)।
৮) ব্যবসায়-বানিজ্য
(Business)।
৯) সংবাদ
(News)।
১০) বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ (Entertainment and
Social Communication)।
১১) সাংস্কৃক
বিনিময় (Cultural
Exchange)।
কোন মন্তব্য নেই