বাংলা ব্যাকরণ সহায়িকা - ZerO to Infinity

Header Ads

বাংলা ব্যাকরণ সহায়িকা

 




নির্ধারিত বেসিক সিলেবাসের অংশ

বাংলা ব্যাকরণের জন্য আমাদের আরো ইবুক আছে যেখানে বিস্তারিত আলোচনা, টেকনিক ও প্রেকটিস অংশ সহ আছে। তাই আই ইবুকে শুধু বেসিক অংশ আলোচনা করা হয়েছে।

Rব্যাকরণ কাঠামো

Cবাংলা ভাষা

Cব্যাকরণ

Rধ্বনিতত্ত্ব

Cধ্বনি ও বর্ণ

Cধ্বনির পরিবর্তন

Cণত্ব-বিধান-এবং-ষত্ব-বিধান

Cসন্ধি

Rরূপতত্ত্ব

Cপদাশ্রিত-নির্দেশক-এবং-অনুসর্গ

Cধাতু-প্রকৃতি-এবং-প্রত্যয়

Cউপসর্গ

Cলিঙ্গ

Cবচন

Cপুরুষ

Cসমাস

Cকারক-ও-বিভক্তি

Cশব্দ

Cদ্বিরুক্ত-শব্দ

Cপদ-প্রকরণ

Cক্রিয়ার-কাল

Rবাক্যতত্ত্ব

          Cবিরাম-চিহ্ন-বা-যতি-চিহ্ন

Cবাক্য

Cবাচ্য

Cউক্তি

Cবানান-শুদ্ধিকরণ

Cবাক্য-শুদ্ধিকরণ

Rছন্দ-ও-অলঙ্কার

About Raisul Islam Hridoy

Raisul Islam Hridoy is a Writer and Digital Publisher. He prepares and distributes free of charge various books for job examination. Raisul Islam Hridoy A well-known and popular person who was born on 20th October 1997.

Cছন্দ

Cঅলঙ্কার-প্রকরণ

Cপরিভাষা

Cবিপরীত-শব্দ

Cসমার্থক-শব্দ

Cবাগধারা-এবং-প্রবাদপ্রবচন

Cশব্দের-বিশিষ্ট-প্রয়োগ

Cবাক্য-সংক্ষেপণ

Cপত্রলিখন-সারাংশ-এবং-ভাবসম্প্রসারণ

Cঅনুবাদ

Cসংবাদপত্র


বাংলা ভাষা

 

ভাষা

মনের ভাব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম ভাষা।  ভাষা হচ্ছে - ভাবের উচ্চারণ।  নির্দিষ্ট পরিবেশে মানুষের বস্তু ও ভাবের প্রতীকই ভাষা।  মানুষের মুখে উচ্চারিত অর্থবোধক ও ম্নোভাব প্রকাশক ধ্বনি সমষ্টিকে ভাষা বলে।  ভাষার অন্যতম বৈশিষ্ট্যগুলো - অর্থদ্যোতকতা,  মানুষের কণ্ঠনিঃসৃত ধ্বনি এবং জনসমাজে ব্যবহার যোগ্যতা।  ব্যাকরণ ও ভাষার মধ্যে ভাষা আগে সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলা ভাষার রীতিভেদ

বাংলা ভাষা প্রধান বা মৌলিক রূপ দুইটি।  যথা- লৈখিক রূপ এবং মৌখিক।  লেখার রীতি ভাষার মৌলিক রীতি।  বাংলা চাষার প্রকারভেদ বা রীতিভেদ নিচের চিত্রের মাধ্যমে দেখানো যায় - লৈখিক রূপ কে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে।  ১) সাধু,  ২) চলিত

মৌখিক রূপ কে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে।  ১) চলিত ২) আঞ্চলিক (উপভাষা)

ক) সাধু রীতি

সংস্কৃত -ব্যতপত্তি সম্পন্ন মানুষের ভাষাকে " সাধু ভাষা " বলএ প্রথম অভিহিত করেন রাজা রামমোহন রায়। বাংলা গদ্যের প্রথম যুগে সাধু রীতির প্রচলন ছিল।

খ) চরিত রীতি

আরো পড়ুনঃ- বাংলা ব্যাকরণ সহায়িকা সম্পূর্ণ অংশ

সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা কে " চলিত ভাষা " বলা হয়।  চলিত ভাষার আদর্শরুপে গৃহীত ভাষাকে বলা হয় প্রতিম ভাষা।  চলিত ভাষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য প্রমিত উচ্চারণ।  কলকাতা অঞ্চলের মৌখিক ভাষাকে ভিত্তি করে চলিত ভাষা গড়ে উঠেছে।  উনিশ শতকের তৃতীয় দশকে ভাবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যয়ের হাতে চলিত রীতির প্রথম ব্যবহার হয়।  তারপর প্যারীচাঁদ মিত্র ও কালী প্রসন্ন সিংহের রচনায় এর ক্রমবিকাশ ঘটে।  আলালের ভাষা ছিল মূলত সাধু ভাষার উপর প্রতিষ্ঠিত কেবল কিছু বর্ণ্না এবং কোনো কোনো সংলাপ চলিত রীতির ; অপরপক্ষে,  হুতোম লেখা হয়েছিল পুরোপুরি চলিত রীতিতে।  প্রম্থ চৌধুরীর "সবুজপত্র "কে কেন্দ্র করে ১৯১৪ সালের দিকে এ গদ্যরীতির সাহিত্যিক স্বীকৃতি ও পূর্ণ বিকাশ লাভ করে।  প্রম্থ চৌধুরী "বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক " বলা হয়।  তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলা গদ্যে চলিত রীতির ব্যাবহারে উদ্বুদ্ধ করেন।

সাধু ও চলিত রীতি পার্থক্য

সাধু রীতি

চলিত রীতি

পদবিন্যাস সুনিয়ন্ত্রিত ও সুনির্দিষ্ট

পরিবর্তনশীল।

গুরুগম্ভীর ও আভিজাত্যের পরিচায়ক

সংক্ষিপ্ত,  সহজবোধ্য ও কৃত্রিমতা বর্জিত।

তৎসম শব্দ বহুল।

তদ্ভব শব্দবহুল।

শুধু লৈখিক রূপ আছে

লৈখিক ও মৌখিক উভয় রূপ আছে।

নাটকের সংলাপ,  বক্তৃতা এবং আলাপ - আলোচনার অনুপযোগী।

নাটকের সংলাপ,  বক্তৃতা এবং আলাপ-আলোচনার উপযোগী।

সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের বিশেষ গঠন পদ্ধতি মেনে চলে।  ক্রিয়া,  সর্বনাম ওয়নুসর্গের পূর্ণ্রুপ ব্যবহ্নত হয়।

সর্ব ও ক্রিয়াপদ পরিবর্তিত ও সহজতর রূপ লাভ করে।  ক্রিয়া, সর্বনাম ও অনুসর্গের রূপ সংক্ষিপ্ত।

আমাদের তৈরি ইবুকগুলো যদি ভালো লাগে তাহলে প্রিমিয়াম ইবুকগুলো কিনতে পারেন। আশাকরি হতাশ হবেন না। যোগাযোগঃ- ০১৯৭৪৫৮১৬১১।

সাধু ও চলিত রীতিতে বিভিন্ন পদের রুপভেদ

সাধু রীতি

চলিত রীতি

সাধু রীতি

চলিত রীতি

দেন নাই

দেন নি

তাঁহারা

তাঁরা

দেখিয়া

দেখে

উঁহারা

ওরা

ফুটিয়া রহিয়াছে

ফুটে রয়েছে

উহা

ওটা

খুলিয়া

খুলে

তাঁহার

তাঁর

ভাঙিয়া যাইতে লাগিল

চেঙে যেলে লাগল

তাহাকে

তাকে

পড়িয়াছেন

পড়েছেন

তিনি

সে

বলিয়া

বলে

ছুটিতে

ছুটতে

গৃহ

ঘর

পাইয়াছিলেন

পেয়েছিলেন

মস্তক

মাথা

পড়িল

পড়ল

জুতা

জুতো

পার হইয়া

পেরিয়ে

সুতা

সুতো

আসিয়া

এসে

তুলা

তুলো

হইলেন

হলেন

পূজা

পূজো

হইয়া

হয়ে

শুষ্ক

শুকনো

হইল

হল

জ্যোৎস্না

জোছনা

করিবার

করবার

করিয়া

করে

বন্য

বনো

করিল

করল

সতিশয়

অত্যন্ত

করিতেছি

করতেছি

কিয়তক্ষণ

কিছুক্ষণ

ফিরিয়া

ফিরে

রঙ্গিন

রাঙিন

আসিবে

আসবে

লাগিল

লাগলো

পূর্বেই

আগেই

চকিত হওয়া

চমকে

সহিত

সঙ্গে,  সাথে

ছড়াইলে

ছড়ালে

অপেক্ষা

চেয়ে

জড়াইলে

জড়ালে

হইতে

হতে

লিকজা

লেখা

দিয়া

দিয়ে

হউক

হোক

জন্য

জন্যে

অদ্য

আজ

লম্ফ

লাফ

-গ্রহ " সাধুরীতির শব্দ।  সাধু ভাষার শব্দে ঙ্গ" এর স্থলে চলিত ভাষায় "ঙ" এর কোমল রুপ ব্যবহ্নত হয়।

সাধু ভাষা

চলিত ভাষা

অতএব,  অতঃপর,  অচিরাৎ,  এবং বিধ,  কদাপি,  কদাচ,  যদ্যপি, প্রায়শ,  বরঞ্চ, নচেত,  ইদানীং, পরন্ত, যুগপত,  সংস্কৃত থেকে আগত প্রভৃতি অব্যয় পদ সাধু ভাষায় ব্যবহৃত হয়।

বাংলার নিজস্ব অব্যয় পদ যেমন- না, বা কি-বা, আচ্ছা, তবু, আর, আরও তো, আবার, মতো, মতন, ছি, দুর, দুত্তোর প্রভৃতি চলিত ভাষায় ব্যবহৃত হয়।

তথাপি -তবু, প্রায়শ -প্রায়ই,  বরঞ্চ-রবং,  অতঃপর- তারপর; এরুপ কিছু অব্যয় সাধু ভাষা থেকে চলিত ভাষায় এসেছে।

সাধু ও চলিত রীতির প্রয়োগ

সাধু রীতিঃ  তখন গভীর ছায়া নামিয়া আসিল সবখানে।

চলিত রীতিঃ  তখন গভীর ছায়া নেমে আসল সবখানে।

সাধু রীতিঃ  কোন ভাষা -রীতিতে এই প্রশ্ন লিখা হইয়াছে?

চলিত রীতিঃ  কোন ভাষা-রীতিতে এ প্রশ্ন লেখা হয়েছে?

সাধু রীতিঃ  অতঃপর তাহারা চলিয়া গেল।

চলিত রীতিঃ  তারপর তারা চলে গেল।

আরো পড়ুনঃ- বাংলা ব্যাকরণ হ্যান্ডনোট

সাধু রীতিঃ  একদা মরণ - সমুদ্রের বেলা ভুমিতে দাঁড়াইয়া কোন এক আরবীয় সাধক বলিয়াছিলেন।

চলিত রীতিঃ একদিন মরণ -সমুদ্রের বেলা ভুমিতে দাঁড়িয়ে কোনো এক আরবীয় সাধক বলেছিলেন।

সাধু রীতিঃ  তোমাকে দেখিয়া খুবই খুশি হইলাম।

চলিত রীতিঃ  তোমাকে দেখে খুবই খুশি হলাম।

সাধু রীতিঃ  সত্যের সহিত মিথ্যার দ্বন্দ্ব রহিয়াছে।  এই দ্বন্দ্বের পরিশেষে সত্যই বিজয়ী হয়।

চলিত রীতিঃ  সত্যের সাথে মিথ্যার দ্বন্দ্ব রহিয়াছে।  এই দ্বন্দ্বের পরিশেষে সত্যই বিজয়ী হয়।

সাধু রীতিঃ  তোমাকে দেখে আমি মুগ্ধ হইলাম।

চলিত রীতিঃ  তোমাকে দেখে আমি মুগ্ধ হলাম।

আঞ্চলিক ভাষা

দেশ-কাল ও পরিবেশভেদে ভাষার পার্থক্য ঘটে।  অঞ্চল বিশেষের মানুষের মুখের ভাষাকে উপভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা বলে।

- মেগো" শব্দের আঞ্চলিক রূপের শিষ্ট পদ্যরূপ"মোদের "।

ব্যাকরণ

বাংলা ব্যাকরণ

ব্যাকরণ" (বি+আ+কৃ+অন) শব্দেটির ব্যুৎপত্তি গত অর্থ - বিশেষভাবে বিশ্লেষণ।  ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ'র মতে, "যে শাস্ত্র জানিলে বাঙ্গালা ভাষা শুদ্ধরূপে লিখিতে,  পড়িতে ও বলিতে পারা যায়,  তাহার নাম বাঙ্গালা ব্যাকরণ"।

ব্যাকরণ ভাষার অনুগামী এবং ভাষাকে বর্ণ্না করে।  ভাষার বিশ্লেষণ এবং ভাষার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা আবিষ্কার ক্রাই ব্যাকরণের প্রধান কাজ।  ব্যাকরণকে ভাষার সংবিধান বলা হয়।

ভাষার মৌলিক অংশ

প্রত্যেক ভাষারই চারটি অংশ থাকে।  যথা- ধ্বনি (Sound), শব্দ (Word), বাক্য (Sentence) এবং অর্থ (Meaning)।

শাখা

আলোচ্য বিষয়

ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology)

  • ধ্বনি উচ্চারণের স্থান
  • সন্ধি বা ধ্বনিসংযোগ
  • ণ-ত্ব বিধি ও ষ-ত্ব বিধি
  • ধ্বনির পরিবর্তন ও লোপ
  • ধ্বনির প্রতীক বা বর্ণের বিন্যাস

শব্দতত্ত্ব বা রূপত্ত্ব (MOrphology)

  • শব্দ
  • শব্দরূপ
  • শব্দদ্বৈত
  • প্রকৃতি-প্রত্যয়
  • পুরুষ
  • কারক-বিভক্তি
  • উপসর্গ
  • অনুসর্গ
  • সমাস
  • বচন
  • লিঙ্গ
  • পদঃ বিশেষ্য, সর্বনাম, বিশেষণ, অব্যয়, ক্রিয়া(ক্রিয়ামূল, ক্রিয়ারকাল)

বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax)

  • বাক্য ও বাক্যবিন্যাসঃ গঠনপ্রণালী, বিভিন্ন উপাদারের সংযোজন,  বিয়োজন।
  • পদবিন্যাসঃ পদের স্থান বা ক্রম, পদের রূপ পরিবর্তন।
  • ছেদচিহৃ
  • বাগধারা
  • বাচ্য

অর্থতত্ত্ব (Semantics)

  • শব্দের অর্থবিচার
  • বাক্যের অর্থবিচার
  • অর্থের বিভিন্ন প্রকারভেদ, যেমন -মুখ্যার্থ, গৌণার্থ,  বিপরীতার্থ ইত্যাদি।
  • ব্যাকরণের উচ্চতর পর্যায়ে আলোচিত হয়।

 -অভিধান (Lexicography),  ছন্দ ও অলংকার প্রভৃতিও ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়।

বৈয়াকরণ

পাণিনি ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃত ব্যাকরণবিদ।  তাঁকে উপমহাদেশে শ্রষ্ঠ ব্যাকরণবিদ বলা হয়।  সংস্কৃত ভাষায় রচিত তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থের নাম"অষ্টাধ্যায়ী"।  তাঁর ব্যাকরণের ধারাগুলো ছিল-ঐন্দ্র, চান্দ্র, শাকটায়নী, হেমচন্দ্রীয় প্রভৃতি।

ব্যাকরণ বিষয়ক গ্রন্থ

রচয়িতা

ভাষা প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়

প্রমিত ভাষার বাংলা ব্যাকরণ

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং অধ্যাপক পবিত্র সরকার।

স্বরধ্বনি

যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের স, অয় ফুস্ফুস থকে নির্গত বাতাস মুখের মধ্যে কোনো ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয় না,  তাদেরকে বলা স্বরধ্বনি। যেমন অ আ ই উ ইত্যাদি।  বাংলা ভাষায় স্বরধ্বনি এগার (১১) টি।  মৌলিকতা অনুযায়ী,  স্বরধ্বনিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।।  যথা-

ক) মৌলিক স্বর- বাংলা ভাষায় মৌলিক স্বরধ্বনি ৭ টি।  যথা - অ আ ই উ এ্যা এ ও ধ্বনিতত্ত্ববিদ মুহম্মদ আবদুল হাই বাংলা মূল স্বরধ্বনির তালিকায় এ্যা ধ্বনি প্রতিষ্ঠা করেন।

ক) যৌগিক স্বর- পাশাপাশি দুই টি স্বরধ্বনি একাক্ষর হিসেবে উচ্চারিত হলে তাকে যৌগিক স্বরধ্বনি/সন্ধিস্বর/দ্বি-স্বর বলে। অথবা,  একই সঙ্গে উচ্চারিত দুইটি মিলিত স্বরধ্বনি কে যৌগিক স্বর বলে।  বাংলা যৌগিক স্বরধ্বনি মোট ২৫ টি।  বাংলা বর্ণ্মালায় যৌগিক স্বরজ্ঞাপক দুটো বর্ণ রয়েছেঃ ঐ (অ +ই) এবং ঔ (অ+উ)।  অন্য যৌগিক স্বরের প্রতীক স্বরূপ কোনো বর্ণ নেই।

অর্ধ - স্বরধ্বনি

যে স্বরধ্বনি নিজে পূর্ণ অক্ষর গঠন করতে পারে না,  কিন্তু অক্ষর গঠনে সহায়তা করে তাকে অর্ধ- স্বরধ্বনি বলে।  বাংলা ভাষায় চারটি অর্ধ-স্বরধ্বনি রয়েছে। যেমন - ই, উ, য় এবং ও।  উদাহরণ - মই, ঢেউ, যায় এবং যাও।

উচ্চারণের কাল - পরিমাণ অনুযায়ী,  স্বরধ্বনিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।  যথা-

১) হ্রস্ব স্বরঃ অ ই উ ঋ (৪) টি।

২) দীর্ঘ স্বরঃ আ ঈ ঊ এ ওই ও ঔ (৭) টি।

বাংলা স্বরধ্বনিগুলোর উচ্চারণ নিচের ছকে দেশানো হলো -

স্মমুখ ওষ্ঠাধর প্রসৃত

কেন্দীয় ওষ্ঠাধর বিবৃত

পশ্চাৎ ওষ্ঠাধর গোলাকৃত

উচ্চ

ই, ঈ

উ ঊ

উচ্চমধ্য

নিম্নমধ্য

অ্যা

নিম্ন

বাংলা স্বরধ্বনিগুলোর উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী নিচের ছকে দেশানো হলো -

উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী নাম

স্বরবর্ণ

উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী নাম

স্বরবর্ণ

কণ্ঠ বর্ণ

অ আ

ওষ্ঠ্য বর্ণ

উ ঊ

তালব্য বর্ণ

ই ঈ

কণ্ঠতালব্য

এ ঐ

মূর্ধন্য বর্ণ

কণ্ঠৌষ্ঠ্য বর্ণ

ও ঔ

ব্যঞ্জনধ্বনি

যে সকল ধ্বনি স্বরধ্বনির সাহায্য ছাড়া স্পষ্টরূপে উচ্চারিত হতে পারে না তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জন্ধ্বনি। যেমন - ক চ ৎ প ইত্যাদি। ব্যঞ্জন্ধ্বনির লিখিত রূপকে ব্যঞ্জন ব্ররণ বলা হয়।  বাংলা ব্যঞ্জন বর্ণ ৩৯ টি।

ব্যঞ্জনধ্বনির শ্রেণি বিভাগঃ

স্পর্শধ্বনি বা বর্গীয় ধ্বনিঃ যে ব্যঞ্জনের উচ্চারণে ফুস্ফুস তাড়িত বাতাস মুখবিরবে কোথাও না কোথাও বাধা পেয়ে বেরিয়ে যায় এবং বাধা পেয়ে স্পষ্ট হয় তাকে স্পর্শধ্বনি বা বর্গীয় ধ্বনি বলা হয়।  ক থেকে ম পর্যন্ত পঁচিশটি ধ্বনিকে স্পর্শধনি বলে।  উচ্চারণ স্থানের দিক থেকে এদের পাঁচটি গুচ্ছে বা বর্গে বা প্ররবে ভাগ করা হয়েছে। .

বর্গ

ব্যঞ্জনধ্বনিরবর্ণ সমূহ

উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী নাম

উচ্চারণের স্থান

ক- বর্গীয়

ক খ গ ঘ ঙ

কণ্ঠ বা জিহ্বামূলীয় বর্ণ

জিহ্বার গোড়ালি ও তালুর নরম অংশের সংযোগে

চ -

চ ছ জ ঝ ঞ

তালাব্য বর্ন

দন্তমূল এবং জিহ্বার সম্মুখ ভাগ

ট- বর্গীয়

ট ঠ ড ঢ ণ

মূর্ধন্য বর্ণ

দন্তমূল এবং জিহ্বার সম্মুখ ভাগ

ত- বর্গীয়

ত থ দ ধ ন

দন্ত্য বর্ণ

জিবের ডগা আর উপর -পাটি দাঁতের সংস্পর্শে

প-বর্গীয়

প ফ ব ভ ম

ওষ্ঠ্য বর্ণ

দুই ঠোঁটের সংস্পর্শে

উষ্মধ্বনি

যে ব্যঞ্জনের উচ্চারণের বাতাস মুখবিরবে কোথাও বাধা না পেয়ে কেবল ঘর্ষণ প্রাপ্ত হয় এবং শিশ ধ্বনির সৃষ্টি করে,  তাকে উষ্মধ্বনি / শিশ ধ্বনি বলে।  যথা- শ ষ স হ।  শিশধ্বনি (শ, ষ, স) এ তিনটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি অঘোষ অল্পপ্রাণ আর হ ধ্বনি ঘোষ মহাপ্রাণ।

অন্তঃস্থ ধ্বনিঃ স্পর্শ বা উষ্ম ধ্বনির অন্তরে অর্থাৎ মাঝে আছে বলে য র ল ব -এ শ্বনিইগুলোকে অন্তঃস্থ ধ্বনি বলা হয় আর বর্ণ গুলোকে বলা হয় অন্তঃস্থ বর্ণ।

অনুনাসিক বা নাসিক্য ধ্বনিঃ বাতাসে কোনো রকম বাধা ছাড়া একইসঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে উচ্চারিত বাগধ্বনিগুলোকে অনুনাসিক বা নাসিক্য ধ্বনি বলে।  বাংলা ব্যঞ্জন বর্ণের প্রতিবর্গের পঞ্চম বর্ণের (৫ টি - ঙ ঞ ণ ন ম) ধ্বনি উচ্চারনের সময় ফুস্ফুস নিঃসৃত বায়ু মুখবিরর ছাড়াও নাসারন্ধ্র দিয়ে বের হয় ; অর্থাৎ এগুলোর উচ্চারণের নাসিকার সাহায্য প্র্যোজন হয়।  তাই এগুলোকে বলে অনুনাসিক বা নাসিক্য ধ্বনি।  আর এগুলোর প্রতীক বা বর্ণ কে বলা হয় অনুনাসিক বা নাসিক্য বর্ণ।

উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী বাংলা ব্যঞ্জনধ্বির শ্রেণি বিভাগ -

উচ্চারণ স্থান

ব্যঞ্জন ধ্বনির বর্ণ সমূহ

উচ্চারণ স্থান অনুয়াযী নাম

জিহ্বামূল

ক খ গ ঘ ঙ

কণ্ঠ বা জিহ্বামূলীয় বর্ণ

অগ্রতালু

চ ছ জ ঝ ঞ শ য য়

তালব্য বর্ণ

পশ্চাৎ দন্তমূল

ট ঠ ড ঢ ণ ষ র ড় ঢ়

মুর্ধন্য বর্ণ

অগ্র দন্তমূল

ত থ দ ধ ন ল স

দন্ত্য বর্ন

ওষ্ঠ্য

প ফ ব ফ ম

ওষ্ঠ্য বর্ণ

পরাশ্র্যী ধ্বনিঃ ং, ঃ,  

কম্পনজাত ধ্বনিঃ র

পার্শ্বি ধ্বনিঃ ল

তাড়ন জাত ধ্বনিঃ ড়, ঢ়

অঘোষ ধ্বনিঃ যে ধ্বনি উচ্চারণের সম্য স্বরতন্তী অনুরণতি হয় না,  তাকে বলা হয় অঘোষ ধনি। যেমন- ক খ চ ছ ইত্যাদি।

ঘোষ ধ্বনিঃ যে ধনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয়,  তাকে বলে ঘোষ ধ্বনি।  যেমন -গ,  ঘ জ ঝ ইত্যাদি।

অল্পপ্রাণ ধ্বনিঃ যে ধ্বনি উচ্চারণের সম বাতাসের চাপের স্বল্পতা থাকে, তাকে বলা হয় অল্পপ্রাণ ধ্বনি।  যেমন ক গ চ জ ইত্যাদি।

মহাপ্রাণ ধ্বনিঃ যে ধ্বনি উচ্চারণের সম বাতাসের চাপের আধিক্য থাকে, তাকে বলা হয় মহাপ্রাণ ধ্বনি।  যেমন -খ ঘ ছ ঝ ইত্যাদি অঘোষ

অঘোষ ধ্বনি

ঘোষ ধ্বনি

অল্পপ্রাণ

মহাপ্রাণ

অল্পপ্রাণ

মহাপ্রাণ

নাসিক্য

শ ষ স

কার ও ফলা

কারঃ স্বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে বলা হয় সংক্ষিপ্ত স্বর বা " কার"।  স্বরবর্ণের নামানুসারে এদের নাম করণ করা হয়।  যেমন -

আ - কার (া)

ই-কার (ি)

ঈ-কার (ী)

উ-কার (ু)

ঊ-কার (ূ)

ঋ-কার (ৃ)

এ -কার (ে)

ঐ-কার (ৈ)

ও-কার (ো)

ঔ-কার (ৌ)

অ -এর কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ বা " কার " নেই

ফলাঃ ব্যঞ্জন বর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে বলা হয় " ফলা "।  ফলাযুক্কত হলে বর্ণের আকারের পরিবর্তন সাধিত হয়।  বাংলা ব্যঞ্জন বর্ণের ফলা ছয়টি।  যথা-

ফলার নাম

যুক্ত ফলার ব্যাবহার

য - ফলা ()

দ+য =দ্য

র-ফলা ()

ক+র = ক্র

ন -ফলা(ন)

হ+ন = হ্ন

ণ -ফলা (ণ)

ষ+ণ =ষ্ণ

ম-ফলা (ম)

হ+ম = হ্ম

ব-ফলা (ব)

স+ব = স্ব

 

ফলার ব্যবহার

উদাহরণ

ফলার ব্যবহার

উদাহরণ

ক্য =ক+য

বাক্য

হ্ন= হ+ন

মধ্যাহ্ন

ভ্র= ভ+র

ভ্রমণ

ষ্ণ = ষ+ণ

উষ্ণ

শ্রু = শ+র

অশ্রু

হ্ণ=হ+ণ

পূর্বাহ্ণ

ক্র=ক+র

চক্র

হ্ম+হ+ম

ব্রহ্মা

ত্র=ত+র

পত্র

ল্ব=ল+ব

পল্বব

ধ্বনি ও বর্ণ

ধ্বনি

ভাষার মুল উপাদান হচ্ছে ধ্বনি।  মানুষের বাক -প্রত্যঙ্গ অর্থাৎ কণ্ঠনালী,  মুখবিরর,  জিহ্বা, আল- জিহ্বা,  কোমল তালু,  দাঁত মাড়ি,  চোয়াল,  ঠোঁট,  নাক, ফুস্ফুস ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত আওয়াজকে ধ্বনি বলা হয়।  বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত ধওনির সংখ্যা ৪১ টি।

বর্ণঃ বর্ণ হচ্ছে ধ্বনি নির্দেশক প্রতীক,  অর্থাৎ ধ্বনি নির্দেশক চিহৃকে বলা হয় বর্ণ।  একটি ধ্বনিতে একটি প্রতীক বা বর্ণ থাকে।  "ধ্বনি দিয়ে আঁট বাধা শব্দেরই ভাষার ইট।  এখানে ঈট হচ্ছে বর্ণ।

মাত্রার উপর ভিত্তি করে বর্ণ তিন প্রেকার -

বর্ণ

সংখ্যা

স্বরবর্ণ

ব্যঞ্জনবর্ণ

মাত্রাহীন বর্ণ

১০ টি

৪ টি (এ, ঐ,  ও,  ঔ)

৬ টি (ঙ, ঞ,  ৎ,  ং, ঃ ঁ)

অর্ধ্মাত্রার বর্ণ

৮ টি

১ টি (ঋ)

৭ টি (খ, গ, ণ, থ, ধ, প, শ)

পূর্ণমাত্রার বর্ণ

৩২ টি

৬ টি (অ, আ,  ই, ঈ, উ, ঊ)

২৬ টি

বর্ণমালাঃ যে কোনো ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সে ভাষার বর্ণমালা বলা হয়।  বাংলা বর্ণ মালায় মোট পঞ্চাশ (৫০) টি বর্ণ রয়েছে।  তাঁর মধ্যে এগার (১১) টি এবং ব্যঞ্জন বর্ণ ঊনচল্লিশ (৩৯) টি।  আধুনিক বাংলা ভাষায় মোট ৪৫ টি বর্ণের পূর্ণ রূপ ব্যবহৃত হয়।

প্রকার

বর্ণ

মোট

স্বরবর্ণ

অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ ও ঔ

১১ টি

 

ব্যঞ্জনবর্ণ

ক খ গ ঘ ঙ

৫ টি

৩৯ টি

চ ছ জ ঝ ঞ

৫ টি

ট ঠ ড ঢ ণ

৫ টি

ত থ দ ধ ন

৫ টি

প ফ ব ভ ম

৫ টি

য র ল

৩ টি

শ ষ স হ

৪ টি

ড় ঢ় য় ৎ

৩ টি

ংঃ ঁ

সর্ব মোট

৫০ টি

অক্ষরঃ এক প্রয়াসে উচ্চারিত ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টিকে অক্ষর (Syllable)বলে।  যেমন - বন+ধন= বন্ধন।  এখানে বন এবং ধন দুটি অক্ষর।  পক্ষান্তরে,  ব-ন ধ-ন এগুলো অক্ষর নয় বর্ণ বা হরফ।  অক্ষর উচ্চারনের কাল পরিমাণকে বলে।

📢 বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য সুযোগ!

আপনার কোচিং সেন্টার, শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান, পণ্য বা সেবাকে হাজারো পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে চান?

আমাদের ডিজিটাল ইবুক ও ওয়েবসাইটে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা প্রবেশ করেন। তাই আপনি যদি আপনার ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি, রিচ বাড়ানো বা সুনির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েন্সে পৌঁছাতে চান, তাহলে আমাদের প্ল্যাটফর্ম হতে পারে আপনার সেরা বিজ্ঞাপন মাধ্যম।


🎯 বিজ্ঞাপন দিতে পারেন নিচের ধরণে:

  • 📘 কোচিং সেন্টার/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোর্স ও অফার

  • 🛍️ শিক্ষাসংক্রান্ত পণ্য (বই, শিক্ষা উপকরণ, অ্যাপ ইত্যাদি)

  • 🎓 অনলাইন কোর্স, ওয়েবসাইট বা YouTube চ্যানেল

  • 🖥️ সফটওয়্যার/অ্যাপ/ডিজিটাল সার্ভিস

  • 🏢 আপনার ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের প্রমোশন


💼 আমাদের অফার:

  • ✅ ইবুকের কভার বা শেষ পৃষ্ঠায় বিজ্ঞাপন ব্যানার

  • ✅ ওয়েবসাইটের হোমপেজ ও নির্দিষ্ট পোস্টে বিজ্ঞাপন স্লট

  • ✅ ব্লগ আর্টিকেলে বিজ্ঞাপনযুক্ত লিঙ্ক ও ছবি

  • ✅ বিশেষ সাজেশন বা কোর্স রিভিউ হিসেবে উল্লেখ


📩 যোগাযোগ করুন:

আপনার বিজ্ঞাপন/প্রোমোশনাল কনটেন্ট দিতে বা অফার জানতে ইমেইল করুন –
📧 zerotoinfinity247bd@gmail.com
🌐 অথবা সরাসরি ভিজিট করুন: https://zerotoinfinity24bd.blogspot.com


স্মার্ট বিজ্ঞাপন দিন, স্মার্ট পাঠকের কাছে পৌঁছান!
আমরা আপনার ব্র্যান্ডকে পৌঁছে দেব হাজারো গন্তব্যে।

কোন মন্তব্য নেই

Thank You

New Posts

BCS General Science

  সাধারণ বিজ্ঞান সিলেবাস ভৌত বিজ্ঞান জীব বিজ্ঞান আধুনিক বিজ্ঞান ০৫ ০৫ ০৫ ...

fpm থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.