ভৌত বিজ্ঞান

Raisul Islam Hridoy 0

ভৌত বিজ্ঞান - পদার্থের অবস্থা ও তাদের পরিবর্তন

ভৌত বিজ্ঞান

পদার্থের অবস্থা ও তাদের পরিবর্তন

পদার্থ (Matter) যার ভর আছে, যা কোনো স্থান দখল করে অবস্থান করে, তাকে পদার্থ বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য পদার্থ শক্তি
ভর আছে হ্যাঁ নেই
স্থান দখল করে হ্যাঁ না
উদাহরণ বাতাস, পানি তাপ, আলোক, বিদ্যুৎ

পদার্থের অবস্থাভেদ (States of Matter)

পদার্থ সাধারণত ৩টি অবস্থায় থাকতে পারে। যথা: কঠিন, তরল এবং বায়বীয়।

  • কঠিন পদার্থ: নির্দিষ্ট আয়তন ও নির্দিষ্ট আকার এবং দৃঢ়তা আছে। এর অণুসমূহ পরস্পরের অতি সন্নিকটে অবস্থান করে। উদাহরণ: বালু, পাথর, লবণ ইত্যাদি।
  • তরল পদার্থ: নির্দিষ্ট আয়তন আছে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার নেই। তরল পদার্থের অণুসমূহ পরস্পরের সন্নিকটে থাকে, তবে তাদের মধ্যকার আকর্ষণ কঠিন পদার্থের মত প্রবল নয়। উদাহরণ: পানি, পেট্রোল, কেরোসিন, ভোজ্য তেল প্রভৃতি।
  • গ্যাসীয় পদার্থ: গ্যাসীয় পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন ও নির্দিষ্ট আকার নেই। গ্যাসীয় পদার্থের অণুসমূহের দূরত্ব অনেক বেশি, তাই আকর্ষণ শক্তি অনেক কম। ফলে তারা প্রায় সম্পূর্ণ মুক্তভাবে চলাচল করে। উদাহরণ: নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, মিথেন ইত্যাদি।

তাপ পদার্থের তিন অবস্থায় রূপান্তরের প্রধান কারণ। পানি একমাত্র পদার্থ যা প্রকৃতিতে কঠিন (বরফ), তরল (পানি) এবং বায়বীয় (জলীয়বাষ্প) তিন অবস্থাতেই পাওয়া যায়।

প্রকৃতিতে পানির তিন অবস্থা কঠিন তরল বায়বীয়
মেরু অঞ্চল বা পর্বত শীর্ষের বরফ নদী, সমুদ্রের পানি বায়ুর জলীয় বাষ্প

গলনাঙ্ক (Melting Point)

তাপ প্রয়োগে কোনো কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হওয়াকে গলন বলে। কোনো কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে প্রথমে তার উষ্ণতা বাড়তে থাকে। একটি নির্দিষ্ট উষ্ণতায় কঠিন পদার্থ গলতে শুরু করে। যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্ত কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এ উষ্ণতা স্থির থাকে। এ নির্দিষ্ট উষ্ণতাকে কঠিন পদার্থের গলনাঙ্ক বলে।

উদাহরণ: স্বাভাবিক বায়ুমন্ডলীয় চাপে বরফের গলনাঙ্ক ০° সেলসিয়াস।

স্ফুটনাংক (Boiling Point)

তাপ দিলে তরল পদার্থের উষ্ণতা বাড়তে শুরু করে। একটি নির্দিষ্ট উষ্ণতায় তরল পদার্থ ফুটতে শুরু করে এবং বাষ্পে পরিণত হতে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত সম্পূর্ণ তরল বাষ্পে পরিণত না হয় ততক্ষণ ঐ উষ্ণতা স্থির থাকে। ঐ নির্দিষ্ট উষ্ণতাকে তরল পদার্থের স্ফুটনাংক বলে।

উদাহরণ: স্বাভাবিক বায়ুমন্ডলীয় চাপে পানির স্ফুটনাংক ১০০° সেলসিয়াস।

উর্ধ্বপাতন (Sublimation)

কোনো কোনো ক্ষেত্রে কঠিন পদার্থকে উত্তপ্ত করলে তা তরলে রূপান্তরিত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে রূপান্তরিত হয়, এ প্রক্রিয়াকে ঊর্ধ্বপাতন বলা হয়।

উদাহরণ: কর্পুর, গন্ধক, আয়োডিন, ন্যাপথালিন, নিশাদল, অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড, আর্সেনিক, বেনজোয়িক এসিড ইত্যাদি।

পদার্থের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Matter)

পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

  • মিশ্রণ (Mixture): দুই বা ততোধিক পদার্থকে যে কোন অনুপাতে একত্রে মিশালে যদি তারা নিজ নিজ ধর্ম বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে, তবে উক্ত সমাবেশকে মিশ্রণ বলা হয়।
    উদাহরণ: বায়ু (নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি)।
  • খাঁটি বস্তু (Pure substance):
    • মৌল (Elements): যে বস্তুকে রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করে অন্য কোন সহজ বস্তুতে রূপান্তরিত করা যায় না। মোট মৌলের সংখ্যা ১১৮। এর মধ্যে ৯৮টি প্রকৃতিতে পাওয়া যায়, ২০টি কৃত্রিম।
    • যৌগ (Compound): যে বস্তুকে রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করে দুই বা ততোধিক পদার্থ পাওয়া যায়।
      উদাহরণ: হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন → পানি (H2O)।

পদার্থের পরিবর্তন (Changes in Matter)

পদার্থের পরিবর্তন দুই ধরনের:

ভৌত বা অবস্থানগত পরিবর্তন (Physical Change)

যে পরিবর্তনের ফলে পদার্থের শুধু বাহ্যিক আকার বা অবস্থার পরিবর্তন হয় কিন্তু নতুন কোনো পদার্থে পরিণত হয় না।

  • পানিকে ঠান্ডা করে বরফে এবং তাপ দিয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত করা।
  • একটি রৌহার টুকরাকে চুম্বক দ্বারা ঘর্ষণ করে চুম্বকে পরিণত করা।
  • তাপ দিয়ে মোম গলানো।

রাসায়নিক পরিবর্তন (Chemical Change)

যে পরিবর্তনের ফলে এক বা একাধিক বস্তু প্রত্যেকে তার নিজস্ব সত্তা হারিয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্ম বিশিষ্ট এক বা একাধিক নতুন বস্তুতে পরিণত হয়।

  • লোহায় মরিচা ধরা।
  • دুধকে ছানায় পরিণত করা।
  • চাল সিদ্ধ করলে ভাতে পরিণত হয়।
  • দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানো।

পদার্থের গঠন (Structure of Matter)

ডাল্টনের পরমাণুবাদ (Dalton's Atomic Theory)

গ্রিক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে বলেন, সকল পার্থিব বস্তু ক্ষুদ্র অবিভাজ্য কণা দ্বারা গঠিত। তিনি এ কণার নাম দেন atomos (অর্থ: অবিভাজ্য)।

ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন ডালটন ১৮০৩ সালে এ মতবাদকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাকে ‘আধুনিক রসায়নের জনক’ বলা হয়।

পরমাণু (Atom) অণু (Molecule)
সংজ্ঞা মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য রক্ষাকারী ক্ষুদ্রতম কণা। মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য রক্ষাকারী ক্ষুদ্রতম কণা।
রাসায়নিক বিক্রিয়া সরাসরি অংশগ্রহণ করে। সরাসরি অংশগ্রহণ করে না।

অধিকাংশ মৌলের পরমাণু খুব সক্রিয়। এরা ভিন্ন বা একই পদার্থের সাথে মিলে যৌগ বা মৌলিক অণু সৃষ্টি করে। মৌলিক গ্যাসের অণুসমূহ দ্বিপরমাণুক

📥 পিডিএফ ডাউনলোড করুন (Google Drive)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

New Posts

সাধারণ বিজ্ঞান সাজেশন

সাধারণ বিজ্ঞান সাজেশন (পর্ব-০২) – প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সাধারণ বিজ্ঞান সাজেশন (পর্ব-০২) ...