বাংলা ব্যাকরণ চর্চা

Raisul Islam Hridoy 0

 



আমাদের ইবুকগুলো শুধু আপনি নিজে পড়ার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য কোথাও শেয়ার বা বিক্রি করতে পারবেন না।

আজকের অফার!

আজ আমাদের সব প্রিমিয়াম ইবুকগুলো পাবেন মাত্র ৯৯/- টাকায়।

  • 📐 গণিত সমাধান
  • বেইসিক বিষয়ভিত্তিক নোট
  • 📚 বেইসিক শর্ট নোট
  • 📝 অন্যান্য

যোগাযোগ করুন সরাসরি এডমিনের সাথে

📧 Email: zerotoinfinity247bd@gmail.com 💬 WhatsApp: 01300430768
বাংলা ব্যাকরণ: নবম-দশম শ্রেণী

বাংলা ব্যাকরণ (নবম-দশম শ্রেণী)

মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী

ব্যাকরণের সংজ্ঞা: বিভিন্ন উপাদানের গঠন প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে ব্যাকরণ বলে।

সুতরাং, যে শাস্ত্রে বাংলা ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে বাংলা ব্যাকরণ বলে।

ব্যাকরণের প্রকারভেদ

ব্যাকরণ চার প্রকার। যথা:-

  • ক. বর্ণনাত্মক ব্যাকরণ
  • খ. ঐতিহাসিক ব্যাকরণ
  • গ. তুলনামূলক ব্যাকরণ
  • ঘ. দার্শনিক বিচারমূলক ব্যাকরণ

বর্ণনাত্মক ব্যাকরণ

বিশেষ কোনো কালের কোনো একটি ভাষার রীতি ও প্রয়োগ বর্ণনা করা এর বিষয় এবং সে বিশেষ কালের ভাষা যথাযথ ব্যবহার করতে সাহায্য করা এর উদ্দেশ্য।

ঐতিহাসিক ব্যাকরণ

আধুনিক বা কোনো নির্দিষ্ট যুগের ভাষাগত প্রয়োগরীতি আলোচনা করে আলোচ্য ভাষার রূপটির বিকাশের ইতিহাস পর্যালোচনা করা এর লক্ষ্য।

তুলনামূলক ব্যাকরণ

যে শ্রেণীর ব্যাকরণ কোনো বিশেষ কালের বিভিন্ন ভাষার গঠন, প্রয়োগরীতি ইত্যাদির তুলনামূলক আলোচনা করে থাকে, তা-ই তুলনামূলক ব্যাকরণ।

দার্শনিক বিচারমূলক ব্যাকরণ

ভাষায় অন্তর্নিহিত চিন্তা প্রণালিটি আবিষ্কার ও অবলম্বন করে সাধারণভাবে কিংবা বিশেষভাবে ভাষার রূপের উৎপত্তি ও বিবর্তন কীভাবে ঘটে থাকে, তার বিচার করা এর পর্যায়ভুক্ত।

ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা

  1. ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন-প্রকৃতি জানা
  2. ভাষার বিভিন্ন উপাদানের সুষ্ঠু ব্যবহার করা
  3. ভাষা ব্যবহারের সময় শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় করতে পারা

ড. মুহম্মদ এনামুল হক বলেছেন: “আলো, জল, বিদ্যুৎ, বাতাস প্রভৃতি সম্বন্ধীয় বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও তথ্য না জানিয়াও মানুষ বাঁচিয়াছে, বাচিতেছে ও বাঁচিবে। কিন্তু, তাই বলিয়া! ঐ সমস্ত বস্তুর বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও তথ্যকে মানুষ অস্বীকার করিয়া বর্তমান সভ্যতার গগনবিচুম্বী সৌধ নির্মাণ করিতে পারে নাই।

ব্যাকরণ না জানিয়াও ভাষা চলিতে পারে; কিন্তু ভাষাগত সভ্যতা না হউক, অন্তত সভ্যতার পত্তন বা সমৃদ্ধি হইতে পারে না। এই জন্যই শিক্ষিত ব্যক্তির পক্ষে ব্যাকরণ-সম্বন্ধীয় সাধারণ জ্ঞানের সঙ্গে বিশেষ জ্ঞানও আবশ্যক।”

বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়

প্রতিটি ভাষারই ৪টি মৌলিক অংশ থাকে— ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ও অর্থ। আর তাই সব ভাষার ব্যাকরণই প্রধানত এই ৪টি অংশ নিয়েই আলোচনা করে। অর্থাৎ, ব্যাকরণের বা বাংলা ব্যাকরণের মূল আলোচ্য বিষয়/অংশ ৪টি—

  1. ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology)
  2. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology)
  3. বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax)
  4. অর্থতত্ত্ব (Semantics)

এছাড়াও ব্যাকরণে আরো বেশ কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— অভিধানতত্ত্ব (Lexicography), ছন্দ ও অলংকার, ইত্যাদি

মূল সংজ্ঞাসমূহ

  • ধ্বনি: কোন ভাষার উচ্চারণের ক্ষুদ্রতম এককই হলো সেই ভাষার ধ্বনি। ধ্বনি ভাষার মূল উপাদান।
  • ধ্বনিমূল: ধ্বনির সূক্ষ্মতম মৌলিক অংশকে বা একককে বলা হয় ধ্বনিমূল বা phoneme
  • বর্ণ: বিভিন্ন ধ্বনিকে লেখার সময় বা নির্দেশ করার সময় যে চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, তাকে বর্ণ বলে।
  • শব্দ: একটি ধ্বনি বা একাধিক ধ্বনি একত্রিত হয়ে যখন কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে, তখন সেই ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে শব্দ বলে। বাক্যের মূল উপাদান শব্দ।
  • রূপ: শব্দের ক্ষুদ্রতম অংশকে বলা হয় রূপ বা morpheme
  • বাক্য: কতোগুলো পদ সুবিন্যস্ত হয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করলে তাকে বাক্য বলে। ভাষার মূল উপকরণ বাক্য।

বাংলা ব্যাকরণের মূল ৪টি অংশে আলোচ্য বিষয়

ব্যাকরণের অংশ আলোচ্য বিষয়
ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology) ধ্বনির উচ্চারণবিধি
ধ্বনি পরিবর্তন
সন্ধি/ধ্বনিসংযোগ
ণত্ব ও ষত্ব বিধান
শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology) সমাস
প্রকৃতি-প্রত্যয়
উপসর্গ
বচন
পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ
দ্বিরুক্ত শব্দ
সংখ্যাবাচক শব্দ
পদাশ্রিত নির্দেশক
ধাতু
শব্দের শ্রেণীবিভাগ
বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax) পদ প্রকরণ
ক্রিয়াপদ
কারক ও বিভক্তি
কাল
পুরুষ
অনুসর্গ
বাগধারা
বাচ্য
উক্তি
যতি ও ছেদ চিহ্ন
বাক্যের প্রকারভেদ
বাক্যে পদ-সংস্থাপনার ক্রম বা পদক্রম
অর্থতত্ত্ব (Semantics) শব্দের অর্থবিচার
বাক্যের অর্থবিচার
অর্থের প্রকারভেদ; মুখ্যার্থ, গৌণার্থ, বিপরীতার্থ

ধ্বনি

মানুষের বাগযন্ত্র তথা কন্ঠনালী, মুখবিবর, জিহবা, আল জিহ্বা, কোমল তালু, শক্ত তালু, দাঁত, মাড়ি, ঠোঁট, চোয়াল ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত আওয়াজকে ধ্বনি বলে।

ধ্বনির প্রকারভেদ

উচ্চারণের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ধ্বনিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:-

  1. স্বরধ্বনি
  2. ব্যঞ্জনধ্বনি

স্বরধ্বনি

যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুসতাড়িত বাতাস বাগযন্ত্রের কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হয় না, তাদের স্বরধ্বনি বলে। বাংলাভাষায় স্বরধ্বনির সংখ্যা ১১ টি। যথা - অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ঋ, এ, ঐ, ও, ঔ।

ব্যঞ্জনধ্বনি

যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুসতাড়িত বাতাস বাগযন্ত্রের কোথাও না কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হয় বা ঘর্ষণ লাগে তাদের ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। বাংলাভাষায় ব্যঞ্জনধ্বনির সংখ্যা ৩৯ টি

ক, খ, গ, ঘ, ঙচ, ছ, জ, ঝ, ঞট, ঠ, ড, ঢ, ণ
ত, থ, দ, ধ, নপ, ফ, ব, ভ, ময, র, ল
শ, ষ, স, হড়, ঢ়, য়ৎ, ং, ঃ, ঁ

স্বরধ্বনির প্রকারভেদ

  • হ্রস্বস্বর: অ, ই, উ।
  • দীর্ঘস্বর: আ, ঈ, ঊ, এ, ঐ, ও, ঔ।

ব্যঞ্জনধ্বনির প্রকারভেদ (উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী)

  • কণ্ঠ্য ধ্বনি: ক, খ, গ, ঘ, ঙ
  • তালব্য ধ্বনি: চ, ছ, জ, ঝ, ঞ
  • মূর্ধন্য ধ্বনি: ট, ঠ, ড, ঢ, ণ
  • দন্ত্য ধ্বনি: ত, থ, দ, ধ, ন
  • ওষ্ঠ্য ধ্বনি: প, ফ, ব, ভ, ম
  • অন্তঃস্থ ধ্বনি: য, র, ল
  • উষ্ম ধ্বনি: শ, ষ, স, হ
  • তাড়নজাত ধ্বনি: ড়, ঢ়
  • পরাশ্রয়ী ধ্বনি: ং, ঃ, ঁ

উচ্চারণ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী

  • অঘোষ ধ্বনি: ক, খ, চ, ছ, ট, ঠ, ত, থ, প, ফ
  • ঘোষ ধ্বনি: গ, ঘ, জ, ঝ, ড, ঢ, দ, ধ, ব, ভ
  • অল্পপ্রাণ ধ্বনি: ক, গ, চ, জ, ট, ড, ত, দ, প, ব
  • মহাপ্রাণ ধ্বনি: খ, ঘ, ছ, ঝ, ঠ, ঢ, থ, ধ, ফ, ভ

ধ্বনির পরিবর্তনের বিভিন্ন নীতি

ভাষাবিজ্ঞানীরা ধ্বনি পরিবর্তনের চারটি রীতির কথা বলেছেন—

  1. ধ্বনির লোপ
  2. ধ্বনির আগম
  3. ধ্বনি রূপান্তর
  4. ধ্বনির স্থানান্তর

১. ধ্বনির লোপ

স্বরধ্বনির লোপ

  • আদি স্বরলোপ: অলাবু > লাভ, অন্তর > ভিতর, উদ্ধার > ধার
  • মধ্য স্বরলোপ: নাতিনি > নাতনি, জানালা > জানলা, গামোছা > গামছা
  • অন্ত স্বরলোপ: রাত্রি > রাত, আজি > আজ

ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ

  • আদি ব্যঞ্জনলোপ: স্থান > দান, স্ফটিক > ফটিক
  • মধ্য ব্যঞ্জনলোপ: ফাল্গুন > ফাগুন, কার্পাস > কাপাস
  • অন্ত ব্যঞ্জনলোপ: গাত্র > গা, কুটুম্ব > কুটুম
📥 পিডিএফ ডাউনলোড করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

New Posts

সাধারণ বিজ্ঞান সাজেশন

সাধারণ বিজ্ঞান সাজেশন (পর্ব-০২) – প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সাধারণ বিজ্ঞান সাজেশন (পর্ব-০২) ...