বাক্য চেনার উপায়
💡 বাক্য চেনার সহজ উপায়: গঠন ও অর্থ অনুসারে শ্রেণীবিভাগ 💡
বাংলা ব্যাকরণে বাক্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার মূল মাধ্যমই হলো বাক্য। কিন্তু একটি বাক্যকে তার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সহজে চিনবেন কীভাবে? আসুন, গঠন ও অর্থ অনুসারে বাক্যের বিস্তারিত শ্রেণীবিভাগ ও তাদের চেনার সহজ উপায় জেনে নিই।
বাক্য কী?
সহজ কথায়, **বাক্য** হলো একগুচ্ছ শব্দের সুবিন্যস্ত সমন্বয়, যা বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে। অর্থাৎ, যে সুবিন্যস্ত পদ বা পদসমষ্টি দ্বারা কর্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তাকেই বাক্য বলে।
মনে রাখবেন, শুধু পদের সমষ্টি হলেই বাক্য হয় না। বাক্য হতে হলে অবশ্যই বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হতে হবে।
গঠন অনুসারে বাক্যের শ্রেণীবিভাগ (৩ প্রকার)
গঠন অনুসারে বাক্যকে প্রধানত **তিন ভাগে** ভাগ করা হয়েছে:
- সরল বাক্য
- যৌগিক বাক্য
- জটিল বাক্য বা মিশ্র বাক্য
১. সরল বাক্য
যে বাক্যে **একটি মাত্র কর্তা** এবং **একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া** থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে।
🎯 **সরল বাক্য চেনার উপায়:**
- একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকবে। (যেমন: খাই, গেল, করবে ইত্যাদি।)
- বাক্যে অনেকগুলো অসমাপিকা ক্রিয়া থাকতে পারে। (যেমন: আকাশ বাড়ি এসে, সারাদিন ঘুরে ক্লান্ত হয়ে সন্ধ্যায় ফিরে এসে খেয়ে শুয়ে পড়লো।)
২. যৌগিক বাক্য
দুই বা তার অধিক সরল বা জটিল বাক্য একত্রিত হয়ে যখন একটি সম্পূর্ণ বাক্য গঠন করে, তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে। এই বাক্যগুলো কিছু সংযোজক শব্দ বা অব্যয় দ্বারা যুক্ত থাকে।
🎯 **যৌগিক বাক্য চেনার উপায়:**
দুটি বাক্য সাধারণত নিম্নলিখিত অব্যয়গুলো দ্বারা যুক্ত থাকে:
ও, এবং, আর, কিন্তু, অথবা, অথচ, তারপর, সুতরাং, কিংবা, বরং, তথাপি, নতুবা, যদ্যপি ইত্যাদি।
৩. জটিল বা মিশ্র বাক্য
জটিল বাক্যের অপর নাম মিশ্র বাক্য। যে বাক্যে **একটি প্রধান খন্ড-বাক্যের সাথে এক বা একাধিক আশ্রিত বাক্য** পরস্পর যুক্ত হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্য গঠন করে, তাকে জটিল বা মিশ্র বাক্য বলে।
যে ব্যক্তি কষ্ট করে, সে ব্যক্তি শান্তি লাভ করে।
🎯 **জটিল বাক্য চেনার উপায়:**
- বাক্যের মধ্যে **সাপেক্ষ সর্বনাম** বা **সাপেক্ষ অব্যয়** বিদ্যমান থাকে।
- সাপেক্ষ সর্বনামগুলো হলো: যে-সে, যেমন-তেমন, যখন-তখন, যদিও-তবুও, যদি-তাহলে ইত্যাদি।
- এই বাক্যের অদ্য অক্ষর সাধারণত 'য' বা 'ত' দিয়ে শুরু হয়। (যেমন: যখন, তখন, যদি, তবে, যে, সে ইত্যাদি।)
বাক্য নির্ণয়ের সহজ সূত্র (Quick Tips)
যে-কোনো বাক্য নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই ধারাবাহিক সূত্রগুলো প্রয়োগ করুন:
- অব্যয় (ও, এবং, কিন্তু, সুতরাং ইত্যাদি) আছে? ➡️ **যৌগিক বাক্য**।
- সাপেক্ষ সর্বনাম (যে-সে, যখন-তখন ইত্যাদি) আছে? ➡️ **জটিল বা মিশ্র বাক্য**।
- একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া আছে? ➡️ **সরল বাক্য**।
- একাধিক সমাপিকা ক্রিয়া এবং ক্রিয়াগুলো পরস্পর নির্ভরশীল? ➡️ **জটিল বাক্য**।
- একাধিক সমাপিকা ক্রিয়া এবং ক্রিয়াগুলো পরস্পর নির্ভরশীল নয়? ➡️ **যৌগিক বাক্য**।
অর্থ অনুসারে বাক্যের শ্রেণীবিভাগ (৭ প্রকার)
অর্থের প্রকাশভঙ্গির ভিত্তিতে বাক্যকে প্রধানত **সাত ভাগে** বিভক্ত করা হয়েছে:
- বিবৃতিমূলক বাক্য (অস্থিবাচক/নেতিবাচক)
- প্রশ্ন-বাচক বাক্য
- অনুজ্ঞা-বাচক বাক্য
- ইচ্ছা বা প্রার্থনা-সূচক বাক্য
- কার্য-কারণাত্মক বাক্য
- সন্দেহ-সূচক বাক্য
- আবেগ-সূচক বাক্য (বিস্ময়সূচক)
বিস্তারিত আলোচনা
১. বিবৃতিমূলক বাক্য
যে বাক্য দ্বারা কোনো কিছু বিবৃতি বা বর্ণনা করা হয়। (যেমন: করীম গান গায়।)
- অস্থিবাচক/হ্যাঁ-বোধক: অস্তিত্ব স্বীকার করে। (যেমন: সে চুপ করে রইল।)
- নেতিবাচক/না-বোধক: অস্তিত্ব অস্বীকার করে। (যেমন: সে চুপ করে রইল না।)
২. প্রশ্ন-বাচক বাক্য
যে বাক্য দ্বারা কোনো কিছু জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন করা হয়। শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?) থাকে। (যেমন: তোমার পছন্দের ফুল কি?)
৩. অনুজ্ঞাবাচক বাক্য
যে বাক্য দ্বারা আদেশ, উপদেশ, অনুরোধ, বিধি বা নিষেধ বোঝায়। (যেমন: সদা সত্য কথা বলবে।)
৪. ইচ্ছাসূচক বাক্য
বক্তার মনের ইচ্ছা, প্রার্থনা, বাসনা বা কামনা প্রকাশ পায়। (যেমন: তুমি সুখী হও।)
৫. কার্যকারণাত্মক বাক্য
যে বাক্যের মাধ্যমে কোনো কারণ বা শর্ত বোঝায়। (যেমন: যদি মনোযোগ দিয়ে না পড়ো, তাহলে পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট করবে।)
৬. সন্দেহসূচক বাক্য
যে বাক্য কোনো সংশয়, সন্দেহ বা সম্ভাবনা প্রকাশ করে। (যেমন: হয়তো একদিন সে আসবে।)
৭. বিস্ময়সূচক বাক্য
বক্তার আবেগ, অনুভূতি, বা বিস্ময় প্রকাশিত হয়। বাক্যের শেষে বিস্ময়সূচক চিহ্ন (!) থাকে। (যেমন: আহ কি মজা!)
🎓 বিশেষ অফার!
একাডেমিক ওয়ার্ড ফাইল কিনুন
বিস্তারিত জানতে এবং অর্ডার করতে যোগাযোগ করুন:
📧 ইমেইল করুন: raysulislamredoy@gmail.com 🟢 WhatsApp: 01300430768
 


কোন মন্তব্য নেই
Thank You